কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে টাকায় মিমাংসা!
কুমারখালীতে শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন চালিত অবৈধ বাটাহাম্বা (স্থানীয়ভাবে নামকরন) পরিবহনের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে হুসাইন (৭) নামের এক শিশু’র মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিলাইদহ ইউনিয়নের কসবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটিকে পিষ্ঠ করে পালিয়ে যাওয়ার মুহুর্তে অবৈধ পরিবহণ ও ঘাতক চালক উবাই (২৪) কে ঘটনাস্থলেই আটক করে স্থানীয়রা।
এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা অবৈধ পরিবহণে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালানোর চেষ্টা করে। নিহত শিশুটির বাবা রোকনুজ্জামান সহ স্বজনদের আর্তনাদে কেঁদেছে এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে চালককে আটক করে।
এদিকে, স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানাগেছে, অবৈধ পরিবহণের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনাটি কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই মাত্র দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করা হয়েছে। শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সংলগ্ন আলো ট্যুরিষ্ট কমপ্লেক্সের কক্ষে এ বিষয়ের মিমাংসা বৈঠকে থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ সরদার, উপ পরিদর্শক (এসআই) মহসিন উপস্থিত ছিলেন। শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ্উদ্দিন খান তারেক আড়ালে থাকলেও তার ঘনিষ্ঠজনদের উদ্যোগেই শিশুটির স্বজনেরা মিমাংসা বৈঠকে বসতে রাজী হয়েছে বলে জানাগেছে।
এদিকে নিহত শিশু হুসাইনের লাশ সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে কসবা গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পদ্মা নদী থেকে মাটি ও বালি টানা এই অবৈধ পরিবহণগুলো বেপরোয়া গতিতে রাস্তায় চলাচল করে। এই গাড়ির চালকেরা একেবারেই অদক্ষ। এই গাড়ি চলাচলের কারণে শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। আর এই ঘটনাগুলো যদি বিচারের পরিবর্তে এভাবে টাকায় মীমাংসা হয় তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা আদৌ সম্ভব নয়।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও শিক্ষক বলেন, নদী থেকে মাটি, বালি ও ইট বোঝাই গাড়িগুলোর চালকেরা একেবারেই অদক্ষ এবং চালকদের অধিকাংশই শিশু শ্রেণীর। তারা গ্রামের সড়ক দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করায় আমাদেরকে নিরাপত্তাহীনতায় চলাচল করতে হয়।
এদিকে, আরেকটি সূত্র জানাযায়, প্রায় এক বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান সালাহ্উদ্দিন খান তারেকের নিজস্ব পরিবহনের চাকায় পিষ্ঠ হয়ে একজন নিহত হলেও টাকার বিনিময়ে ওই ঘটনাও মিমাংসা করা হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘাতক চালক পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং ঘটনাটি নিহত শিশু’র স্বজনদের সঙ্গে মিমাংসার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মিজানুর রহমান।