চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার আইলহাসের বেগর মাঠে থেকে গলাকাঁটা জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের আইলহাস গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের একমাত্র ছেলে হাসিবুর রহমান ( ৩০)। আইলহাসের বেগর মাঠ নামকস্থানের ধানক্ষেত থেকে গলকাঁটা জবাই করা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তবে এই বিষয়ে কথা হয় হাসিবুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুনের সাথে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের বাড়ির সাথে মুদির দোকান আছে তবে প্রতিদিনের ন্যায় গত শুক্রবার দোকান বন্ধ করে ঘরে ফিরে রাত ৯ টার দিকে। হঠাৎ করে আমার স্বামীর মোবাইলে রিং আসে। কথা বলতে বলতে বাড়ি থেকে সাড়ে ৯ টার দিকে বের হয় হাসিবুর। অনেক রাত হয়ে গেলে ঠিক ১১ টার দিকে আমি হাসিবুরের মোবাইল ফোনে রিং দিলে ফোন বন্ধ পায়। পরে আমি আমার শশুর ও শ্বাসড়ীকে জানায়। ঐ রাত্রে অনেক খোঁজাখুজি করেও হাসিবুরকে পাওয়া যায়নি।
আরও জানা যায়, গত আট বছর আগে হাসিবুর ও হিরা খাতুনের বিবাহ হয়েছে। তাদের কোল জুড়ে ৬ বছরের পুত্র সন্তানও রয়েছে।
আরও জানায় প্রতিবেশী মৃত শুকুর আলীর ছেলে আফিল গত ২ মাস আগে বাড়িতে এসে বলেন তোমার স্বামীকে সাবধান করে দিও, যেন সে ভালো হয়ে চলে। তা না হলে সমস্যায় পড়বে।
তবে গতকাল শনিবার সকালের দিকে একই ইউনিয়নের ঘোলদাড়ি গ্রামের মৃত হারান মন্ডলের ছেলে ছানোয়ার হোসেন প্রতিদিনের ন্যায় আইলহাসের বেগর মাঠে ধানক্ষেতে স্যালোমেশিনে জমিতে পানি সেচ দেওয়ার জন্য গেলে হঠাৎ করেই প্রথমে দেখতে পায় একটি গলাকাঁটা লাশ ধানক্ষেতে পড়ে আছে। পরে তিনি জমিতে পানি সেচ না দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে এবং বিষয়টি গ্রামের লোকজনকে জানায়।
তবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়, ঘোলদাড়ি ক্যাম্পের ইনর্চাজ এস আই ইসলাম হোসেন ও আলমডাঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার জিয়াউর রহমান এবং এস আই পিয়ার আলী হাসিবুরের লাশটি উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা মর্গে পাঠান।
তবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূর্বে কোন শত্রুতা বা নারী ঘটিত বিষয়ে জের ধরে হাসিবুরকে নৃঃশংস ভাবে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। পুরো মুখে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলাকাঁটে, বাম হাত ও ডান হাতের আঙ্গুল কেটে, বেগর মাঠে ধানক্ষেতে কাঁদার মধ্যে ফেলে পালিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা।
কথা বলা হয় সাধারণ জনগণদের সাথে, এক পর্যায়ে ভেসে আশে হাসিবুর না কি প্রতিবেশী আফিলের স্ত্রীর সাথে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিলো, এর কারণে এই ঘটনাটি ঘটতে পারে।
এছাড়াও আরও জানাগেছে হাসিবুর নারী ঘটিত ব্যবসা করতো, বাইরে থেকে মহিলা নিয়ে এসে এলাকাতে নারী ব্যবসা করতো বলে জানিয়েছে সাধারণ কিছু লোক, এর কারণেও এই ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে আশা করছেন সাধারণ জনতা।
তবে খবর পেয়ে লাশের বাড়িতে পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ, হাসিবুরের বাবা মাকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, আমার ছেলে ভালো ছিলো কখনও খারাপ কোন কাজ করেনি। তবে ইউ পি. নির্বাচনে বিএনপির হয়ে ভোট করেছিলো বলে জানায়। স্ত্রী হিরা খাতুনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমার স্বামী সাথে চলা ফেরা করতো একই গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে আফিল। গত ২ মাস আগে আমাদের বাড়িতে এসে বলেন তোর স্বামীকে সাবধান করে দিস যাতে করে ভালো হয়ে চলে, তা না হলে খবর আছে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে বলে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয়।
এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ স্যার হাসিবুরের বাবা, মা ও স্ত্রীকে ও গ্রামের জনগণদের বলেন হাসিবুরের হত্যাকারিদের কে আপনারা ধরিয়ে দেন এবং অবশ্যই আসামীদের কে ধরে আমরা আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেব।