বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছেন, তাঁর সন্তানকে কীভাবে মেরে ফেলা হয়েছে, তিনি যেন তা দেখেন। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে গণমাধ্যমের কাছে তিনি এই অনুরোধের কথা তুলে ধরেন।
আবরারের বাবা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পিতা-মাতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। উনি তো এই জ্বালা জানেন। আমার সন্তানকেও নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। সন্তানকে যেভাবে মারেচে দেখলিপারে, উনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি নিজে দেখেন তাহলে উনি নিজেই বিচার করবেন।’
সকালে জিলা স্কুলে আবরারের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। জিলা স্কুলের ২০১৫ সালের এসএসসি ব্যাচের ছাত্র ছিলেন আবরার। তার সহপাঠী ও জিলা স্কুল কর্তৃপক্ষের আয়োজনে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যতটুকু দেখছি, তাতে আমি খুশি। আরও চাই, যাতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হয়।’
তবে বুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি বলে গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন বরকত উল্লাহ্।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘অমিত সাহা নামে একজনের কক্ষে আমার ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে। তার নামটা এজাহারে আসে নাই। গতকাল (মঙ্গলবার) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ হয়েছে, তাকে বলেছি অমিত সাহাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উনি (তদন্ত কর্মকর্তা) বলেছেন, তদন্ত করে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
কুষ্টিয়া স্কুল জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধানশিক্ষক এফতেখারুল ইসলাম লোটাস, আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহম্মেদ, জেলা যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবি, জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষকবৃন্দ, আবরারের সহপাঠী, জিলা স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ। আজও এ হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন সারাদেশের শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা।
গত রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সোমবার ভোরে শের-ই-বাংলা হলের প্রথম ও দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী জায়গায় আবরারের নিথর দেহ পাওয়া যায়। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের (ইইই) বিভাগের লেভেল-২ এর টার্ম ১ এর ছাত্র ছিলেন। তিনি শের-ই-বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে। কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে তিনি স্কুলজীবন শেষ করে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।