আজ বুধবার ব্যাপক উৎসব উদ্দিপনায় মধ্যে শুরু হচ্ছে বগুড়া ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। ইতি মধ্যে মেলার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে আয়োজকরা। মেলাকে ঘিরে উত্তরাঞ্চলসহ বগুড়া জেলা ও গাবতলী উপজেলা জুড়ে ব্যাপক উৎসবের আমেজ ও সবার ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের বণ্যা। কাল জামাই মেলা পরশু বউ মেলা’র মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই আয়োজন।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ী বন্দরের পূর্বধারে গাড়ীদহনদী ঘেষে পোড়াদহ নামক স্থানে সন্ন্যাসী পূঁজা উপলক্ষে ১ দিনের জন্য ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা যা পোড়াদহ নামক স্থানে হওয়ায় স্থানীয় ভাবে অনেকে পোড়াদহ মেলাও বলে থাকেন।
এই বছরে মেলা চত্বরে বাহারী ধরনের মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল সাজিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ শ দোকান বসেছে। থাকছে মাছের বেশ কয়েকটি অস্থায়ী আড়ৎসহ অসংখ্য মাছের দোকান। থাকবে দেশী বিদেশী সব ধরনের ছোট বড় মাছ।
মেলাকে ঘিরে ইতিমধ্যে উৎসব আমেজে মেতে উঠেছে বগুড়বাসী। আশপাশের জেলা গুলো থেকেও মেলায় কেনা কাটার জন্য আসবে মানুষ। ১দিনের মেলা হলেও উৎসব চলছে এ সপ্তাহ জুড়েই ।
বিভিন্ন সূত্রে জানাযায়, প্রায় ৪’শ বছর পূর্ব থেকে মেলাটি উদযাপিত হয়ে আসছে। এক সময় সন্ন্যাসী মেলা নাম থাকলেও তা পরিবর্তন হয়ে এখন জামাই মেলা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। ঈদ বা অন্য কোন উৎসবে মেয়ে-জামাইকে দাওয়াত না দিলেও জামাই মেলা’য় দাওয়াত দিয়ে ধুমধাম করে খাওয়াতে হয় যা এখন বগুড়াবাসীর রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবারের মত এবারো মেলার মূল আকর্ষণ থাকবে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির বড় মাছ। থাকবে কুল (বরই), কাঁঠের তৈরি ফার্নিচার। বিক্রির জন্য এক আগেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে হাজার হাজার মন হরেক রকমের ছোট-বড় মিষ্টি। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র, কৃষি সামগ্রী ও খাদ্যদ্রব্যের কয়েকশ দোকান বসেছে মেলায়।
শিশুদের জন্য নাগরদোলা, সার্কাস ও মটর সাইকেল খেলাসহ নানা রকমের বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি কাঁঠ-বাশঁ ও মাটির তৈরী পুতুল-খেলনা ও বেলুনসহ হরেক রকমের জিনিসের দোকানও বসেছে মেলাতে।
বগুড়াই আগত অগণিত জামাইদের সমাগমে জমে উঠেলবে আগামী কাল এর এই জামাই মেলা। জামাইদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের আগমন ঘটবে। পাশাপাশি পরের দিন বউ মেলাতে এলাকার মেয়ে বউসহ তরণীদের মেলা বসবে বলে জানান আয়োজকরা।
নাটোর সিংড়া থেকে আসা মৎস্য ব্যবসায়ী তুষার আলিম জানান, মেলায় পদ্মা থেকে নিয়ে এসেছেন ৮ -২৫ কেজী ওজনের বার্গার মাছ। যা কাল ক্রেতাদের জন্য রাখা হয়েছে। এই সব মাছ ১২ শ থেক্র ১৫ শত টাকা প্রতিকেজী দরে বিক্রি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তারা আর জানান, গত মেলাতে ১লক্ষ ২৭হাজার ৫শ টাকা’ একটি বাগার মাছ দাম উঠেছিল। এবারও অনেক বড় বড় বাগার মাছসহ সব ধরনের মাছ আমদানি করবে আড়ৎদাররা। গতবছরের তুলনায় এবছরে বড় মাছের দাম একটু বাড়তে পারে বলে মন্তব্য তাদের। তবে পুকুরের ছোট সাইজের মাছের দাম গত বারের তুলনায় কম হবে বলেও জানান তারা।
মেলাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে এবং মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।সব মিলিয়ে কাল জামাই মেলা ও পরশু বউ মেলা ব্যাপক উৎসব আমেজের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এমনটিই আশাপ্রকাশ করেন সন্ন্যাসী পূজা কমিটির সভাপতি বাবু প্রশান্ত কুমার রায় ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ননীগোপাল পাল।