সুরাতন নেছা। বয়স ১০০ ছুঁইছুঁই। বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজান গ্রাম দক্ষিণপাড়া গ্রামে। স্বামী ও সন্তানরা না থাকায় অসহায় এ বৃদ্ধা করুন পরিস্থিতি পড়েন। করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর তার অবস্থা আরো করুন হয়ে উঠে। স্থানীয় এক সাংবাদিক এই বৃদ্ধার অবস্থা তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট দেন। আর এই পোস্ট দেখে তাকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত।
মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশ সুপার এক কর্মকর্তার মাধ্যমে ওই বৃদ্ধার জন্য খাদ্যসামগ্রী, ইফতারসামগ্রী ও নগদ টাকা উপহার পাঠান। এমন উপহার পেয়ে কেঁদে ফেলেন ওই বৃদ্ধা।
স্থানীয়রা জানান, বৃদ্ধার স্বামী মারা গেছেন প্রায ৪৫ বছর আগে। ৪ ছেলেও মারা গেছেন। নাতিদের কাছে থাকেন। তবে বেশিরভাগ সময়ই খেয়ে না খেয়ে কাটে তার দিন। করোনা পরিস্থিতিতে নাতিদের কাজ কর্ম না করায় বৃদ্ধাকে তারা সেভাবে দেখভাল করতে পারে না। এই পরিস্থিতি অসুস্থ বৃদ্ধা সমস্যায় পড়ে যান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জেনেও তার পাশে দাঁড়ায়নি। কোনো ভাতাও পান না তিনি। বৃদ্ধার অভিযোগ, ইউপি সদস্যকে টাকা না দেওয়ায় তার কোনো ভাতার কার্ড হয়নি।
বৃদ্ধার অসহায়ত্বের বিষয়টি ফেসবুকে তুলে ধরে পোস্ট দেন স্থানীয় এক সংবাদিক। এছাড়া শহরের একজন সাংবাদিক ওই বৃদ্ধার বিষয়টি কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাতকে জানিয়ে তার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
বিষয়টি জেনে দ্রুত সাড়া দেন পুলিশ সুপার। পুলিশ সুপার ইবি থানার ওসির মাধ্যমে সন্ধ্যার আগেই নানা রকম খাদ্যসামগ্রীর পাশাপাশি নগদ টাকা উপহার হিসেবে পাঠান।
হঠাৎ এমন উপহারসামাগ্রী পেয়ে ভীষণ খুশি হন ওই বৃদ্ধা। তিনি পুলিশ সুপারের জন্য দোয়া করেন।
পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘করোনার কারণে অনেক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে বয়স্করা কষ্টে আছেন। বৃদ্ধার বিষয়টি জানতে পেরে ভীষণ কষ্ট লাগে। তাই তার জন্য কিছু খাদ্য সামগ্রী ও নগদ টাকা পাঠিয়েছি। উনার খোঁজ খবর রাখার নির্দেশ দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ তার পাশে থাকবে জেলা পুলিশ।’