স্বেচ্ছাশ্রমে কুষ্টিয়া পুলিশের জন্য ‘ফেসশিল্ড’ (সংক্রমণ রোধে মুখ ঢেকে রাখার আবরণ) তৈরি করে দিয়েছেন ছুটিতে বাড়িতে থাকা খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বুধবার নিজেদের হাতে বানানো ২০০টি ফেসশিল্ড পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তাঁরা। সেখান থেকে ১০০টি বিকেলে করোনাভাইরাস সংশ্লিষ্ট সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি ১০০টি সরাসরি মাঠের দায়িত্বে থাকা পুলিশসদস্যরা ব্যবহার করবেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, করোনার বিস্তার ঠেকাতে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাঠপর্যায়ে টহলের পাশাপাশি চিকিৎসকদের সুরক্ষা দিতেও তারা নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসকদের মাঝে দুই দফায় ১ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই), বিপুলসংখ্যক মাস্ক, হ্যান্ডগ্লাভস ও স্যানিটাইজার বিতরণ। এর ধারাবাহিকতায় চিকিৎসকদের জন্য ফেসশিল্ড তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতের আহ্বানে সাড়া দেন ছুটিতে কুষ্টিয়ায় বাড়ি থাকা কয়েকজন কুয়েট শিক্ষার্থী।
গত সপ্তাহে ফেসশিল্ড তৈরির উপকরণ কেনার ব্যবস্থা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান। এরপর সেগুলো কুয়েট শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের আসিফ সিদ্দিকীর কাছে পাঠানো হয়। কয়েকদিনের প্রচেষ্টায় তিনি নিজের কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে তৈরি করেন ২০০টি ফেসশিল্ড। বুধবার সেগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবির বলেন, করোনা রোগীদের কাছে গিয়ে সেবা দেওয়ার জন্য ফেসশিল্ড খুবই জরুরি। এটা চিকিৎসকদের সুরক্ষায় ভালো ভূমিকা রাখবে।
কুয়েট শিক্ষার্থী আসিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘ছুটিতে বাড়িতে বসে আছি। করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় কুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে এগিয়ে আসছেন। সেচ্ছাশ্রমে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের জন্য ফেসশিল্ড তৈরি করে দিয়েছি। দেশের এ দুর্যোগে ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে পেরে ভালো লাগছে।’
আসিফ সিদ্দিকী জানান, খুব কম সময়ে অল্প খরচে ফেসশিল্ড তৈরি করা যায়। এটা ব্যবহার করলে কেউ কাশি ও হাঁচি দিলেও মুখে এসে পড়বে না। বিশেষ করে পুলিশ ও চিকিৎসকরা এটা ব্যবহার করলে অনেকটা সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, কুয়েট শিক্ষার্থীদের হাতে বানানো ১০০টি ফেসশিল্ড চিকিৎসকদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০০টি দেওয়া হয়েছে পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের। প্রয়োজনে আরও ফেসশিল্ড তৈরি করা হবে। এই কাজে এগিয়ে আসায় কুয়েট শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ দেন তিনি।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান নিজ কার্যালয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকারের হাতে ১০০টি ফেসশিল্ড তুলে দেন।