জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা মানছেন না অনেক মালিক ও শ্রমিক।
দুই দিন আগে জেলা প্রশাসনের সাথে বৈঠকে বসেন কুষ্টিয়ার বাস মালিক ও শ্রমিক নেতারা। সভায় আশ্বাস দেন তারা সড়কে বাস চালাবেন। এরপর দুই দিন কেটে গেলেও রোডে গাড়ি নামাননি বাস মালিকরা। শেষ পর্যন্ত জনদুর্ভোগ কমাতে গতকাল বৃস্পতিবার বিকেল থেকে গাড়ি নামান বাস মালিক গ্র“পের কার্যকরি সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আতাহার আলী। এছাড়া কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক মকবুল হোসেন লাভলুও গাড়ি নামান। এছাড়া মালিক গ্র“পের যুগ্ম সম্পাদক এমদাদুল হক নান্টু, শ্রমিক নেতারা বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রোডে বাস নামানোর ব্যাপারে তৎপর ছিলেন। তাদের তৎপরতার কারনে সড়কে জনদুর্ভোগ কিছুটা কমে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বাস মালিক গ্র“পের সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলীর সভাপতিত্বে যৌথসভায় বসে বাস মিনিবাস মালিক গ্র“প, বাস মিনিবাস মালিক সমিতি ও মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। তারা সভা থেকে সব রুটে গাড়ি চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। এমন সিদ্ধান্ত হলেও স্থাণীয় কয়েকটি রুট ছাড়া আর কোন রুটে গাড়ি ছাড়েনি মালিকরা। তারা সভার সিদ্ধান্ত মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাস মিনিবাস মালিক গ্র“পের সভাপতি আজগর আলী বলেন,‘ সভা শেষে বাস চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক পরিবহন রোডে নেমেছে। আর কোন সমস্যা থাকবে না ইনশাআল্লাহ।’আগামীকাল থেকে পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিক নেতারা।
তবে দুপুরের দিকে প্রথম গাড়ি রোডে নামান আওয়ামী লীগ নেতা ও বাস মিনিবাস মালিক গ্র“পের কার্যকরি সভাপতি আতাহার আলী। তিনি বিএনপি নেতাদের রোডে গাড়ি নামানোর অনুরোধ করেন। তবে রোডে গাড়ি নামানোর ব্যাপারে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কুষ্টিয়া থেকে মেহেরপুর রুটের খলিশাকুন্ডি পর্যন্ত গাড়ি চালানো হচ্ছে। গাড়ি চালানোর কথা শুনে অনেক যাত্রী ভীড় করেন কাউন্টারে। তারা গাড়ি চালানোর জন্য ধন্যবাদ জানান মালিক ও শ্রমিক নেতাদের। এ সময় মেহেরপুর কাউন্টারে বসে গাড়ি চলাচলের বিষয়টি মনিটরিং করতে দেখা গেছে বাস মালিক ও আওয়ামী লীগ নেতা আতাহার আলী, যুগ্ম সম্পাদক এমদাদুল হক নান্টু, নির্বাহী সদস্য আতিয়ার রহমান, মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আফজাল হোসনকে।
শ্রমিক নেতা আফজাল হোসেন বলেন, গাড়ি চালানোর জন্য সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারপরও বেশির ভাগ মালিক বাড়িতে ঘুমাচ্ছে। আমরা রোডে গাড়ি চালানোর জন্য সকল শ্রমিককে বলেছি। অনেকেই কাজে যোগ দিয়েছে। সব মালিক যদি একটি করে গাড়ি দেয় তাহলে জনদুর্ভোগ অনেক কমে যাবে।’
কথা হলে বেশ কয়েকজন মালিক অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতপন্থি মালিকরা জনদুর্ভোগ বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে সড়কে গাড়ি নামাচ্ছে না। তারা অন্যকে গাড়ি না নামানোর জন্য উৎসাহিত করছে। এতে পুরোপুরি সড়কে বাস চলাচল শুরু হয়নি। এসব বাস মালিকরা ডিসি ও এসপির নির্দেশনা মানছেন না। এমনকি সরকারের মন্ত্রীদের নির্দেশনাও তারা মানছেন না।
বাস মিনিবাস মালিক গ্র“পের কার্যকর সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আতাহার আলী বলেন, আমরা কয়েকজন বাস মালিক দুপুর থেকে সড়কে গাড়ি নামিয়েছি। জনদুর্ভোগ কমাতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যারা সভার সিদ্ধান্ত এমনকি জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মানছে না তাদের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা সরকার ও জনগনকে দুর্ভোগে ফেলতে ভিতরে ভিতরে ষড়যন্ত্র করছে। তারা আন্তঃজেলা কাউন্টার পর্যন্ত সময়মতো খোলেনি। আমরা বলার পর কাউন্টার খুলেছে।’