সকালে সরকারি হাসপাতালে জানানো হয়, গর্ভের সন্তান জীবিত নেই। মৃত সন্তানকে অপসারণ করতে হবে। পরে বেসরকারি হাসপাতালে প্রসব হলো ফুটফুটে জীবিত শিশু।
এই অদ্ভুত ঘটনাটি কুষ্টিয়া জেলা সদরের। কুষ্টিয়ার সরকারি হাসপাতাল আড়াইশ’ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মনির হোসেনের স্ত্রী । ভর্তির তিন দিন পর শনিবার সকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় তার গর্ভের সন্তান আর জীবিত নেই। মৃত সন্তানকে অপসারণ করতে হবে।
প্রসূতির স্বজনরা বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা শরণাপন্ন হন কুষ্টিয়া সদর উপজেলারই বেসরকারি ইসলামিয়া হাসপাতালের। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন গর্ভে মৃত নয়, জীবিত সন্তান রয়েছে। সিজার অপারেশনে এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দেন ওই প্রসূতি।
প্রসূতি বলেন, ‘গত বুধবার আমাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আলট্রাসনো রিপোর্টে দেখা যায় আমার গর্ভে সন্তান আছে। চিকিৎসক তাদের সুবিধামত সময়ে ডেলিভারি করাবেন বলে জানান। কিন্তু শনিবার ভোর ৬টার দিকে জানানো হয় গর্ভের সন্তান জীবিত নয়, মৃত। আমি ভেঙে পড়ি।একজন নার্স আমাকে ইনজেকশন পুশ করেন। এতে আমি যন্ত্রনায় ছটফট করি। পরে আরেকটি ইনজেকশন পুশ করা হয় শরীরে। বুঝলাম মৃত সন্তানটি প্রসবের জন্যই নার্স শরীরে ইনজেকশন পুশ করছেন। পরে আমার স্বামী ও বাবা আমাকে নিয়ে যান ইসলামিয়া হাসপাতালে। সেখানে আলট্রাসনো করানোর পর জানানো হয় গর্ভের সন্তান জীবিত। সিজার অপারেশনে পূত্র সন্তান জন্ম হলেও তার মাথা লম্বাকৃতির। শরীরের অবস্থাও খুব একটা ভালো নেই। দ্রুত সন্তানের চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সেই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালেই। রাখা হয়েছে নিবিড় পর্যবেক্ষণে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিয়া হাসপাতালের চিকিৎসক আবু সাঈদ বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেনারেল হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের কারণেই মা ও শিশুর জীবন বিপন্ন হতে চলেছে। এমন আচরণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কখনো কাম্য নয়।’
তবে এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও তাপস কুমার সরকার তাদের দায় অস্বীকার করে বলেন, ‘এক প্রসুতি হাসপাতালে ভর্তি হলেও মৃত সন্তান হয়েছে মর্মে হাসপাতালের কেউ নিশ্চিত করেনি। আর এমন ঘটনা সঠিক নয়। যদি হাসপাতালের কোন স্টাফ জড়িত থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’