কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আবারও মাদরাসা শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া এক শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে বন্ধ হয়েছে।
পরে কিশোরী ছাত্রীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ।
রোববার সকালে হঠাৎই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাছে হন্তদন্ত হয়ে হাজির হন মাদরাসার ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্রী। ইউএনওও কাছে গিয়ে ভয়ে ভয়ে বলেন ‘আমার মা আমাকে বিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আমি বিয়ে করবো না। আমি পড়াশোনা করতে চাই।
পরে মেয়েটির অভিভাবকে হাজির করা হয় ইউএনও অফিসে। অভিভাবক মেয়েটির মা জানান, আমার স্বামী নেই। মেয়ে বড় হচ্ছে। ভয় আর টেনশন হচ্ছে। পাড়ার লোক কিডা কোন কথা কয়ে (বলে) ফেলে তাই ভালো একটা সম্বোন্ধ আসছিলো বলে আমি বিয়ে ঠিক করেছিলাম। তাছাড়া তাকে (মেয়েকে) পড়ালেখা করানোর মতো ট্যাকা পয়শা নাই। বলেই তাকে বিয়ে দিতাম।
তবে এমন বাল্যবিয়ে হবে না উলেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের ডেকে নেন অফিসে।
পরে সেই মেয়েটির মাকে বিয়ে না দেয়ার জন্য বোঝানো হলে আর বাল্য বিয়ে দেবে না বলে প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করেন।
তাৎক্ষণিক সেই মেয়েটির জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সহযোগিতায় কিছু বইপুস্তক ও অর্থ প্রদান করা হয়। এবং এখন থেকে কিশোরী জিনিয়ার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ।
এ নিয়ে গত তিন মাসে মিরপুরে ১২টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ বলেন, মেয়েটি উপজেলার একটি মাদরাসা থেকে ষষ্ট শ্রেণিতে অধ্যায়নে ছিলো। আর লেখাপড়া চালাতে পারেনি তার অসহায় মা। তবে মেয়েটি বুদ্ধিমান বলেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে ছুটে এসেছিলো। আমি তার পড়লেখার দায়িত্ব নিলাম।
মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হায়দার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজুল ইসলামসহ জিনিয়ার মা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন জিনিয়ার পরিবারসহ এলাকাবাসী।