বাউল সম্রাট লালন শাহের স্মৃতি বিজরিত কালীগঙ্গা নদী এখন শুধুই স্মৃতি হতে চলেছে! কালীগঙ্গা দনী পাড়ে লালন শাহের জীবনকর্ম, জাতহীন মানব দর্শন, মরমি সঙ্গীত ও চিন্তা-চেতনার কারণে কুষ্টিয়ার সুনাম বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। সাংস্কৃতিক মহলে এটি লালনভূমি নামেও পরিচিত।
সেই কালীগঙ্গা নদী পুরোটা দখল করে নিচ্ছে এক শ্রেণীর দখলদার। কেউ দখল নেয়ার জন্য সাজছে ভূমিহীন। কালীগঙ্গার তীরে লালন শাহের আখড়া বাড়ি, লালন মাজার স্থাপিত। প্রতিবছর এ-গ্রামে পালিত হয় লালন স্মরণোৎসব। নির্ধারিত দিনক্ষণে সাধক লালনের আধ্যাত্মিক দর্শনলাভের আশায় দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য বাউল, সাধু, ফকির, লালনভক্তসহ হাজার-হাজার দর্শনার্থীর ঢল নামে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালীগঙ্গা নদীর ভিতর দিয়ে ইমারত নির্মানের কাজ চলছে। রাজমিস্ত্রীদের কাছে খোজ নিয়ে দেখা গেলো ওখানে নাকি তিন তালা ইমারত নির্মানের কাজ চলছে। এই জায়গার মালিক নাকি ডিসি অফিসের নাজির খানার অফিস সহকারী জিয়ার“ল হকের স্ত্রী জামেলা ফেরোদৌস। জামেলা ফেরোদৌস ২০০৬ সালে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান বসুর আলম চাদ স্বাক্ষরিত প্রতয়ন পত্রের বলে প্রমানিত হয় জামেলা ফেরদৌস ভূমিহীন। ইউপি সদস্য আবু মাসুদ মন্টু ভূমিহীন নিশ্চিত করেন। এর জেরে ডিসি অফিস থেকে তিনি কালীগঙ্গা নদীর ভেতর ০.২০ একর জমি ৯৯ বছরের জন্য ডিসিআর কেটে নেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, জামেলা ফেরদৌস তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি জমি ৩১ লক্ষ টাকা বিক্রয় করে দেন। যেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে এই ৩ তলা ভবন ঠিক তার অপর পাশেই তার ভাইয়ের দ্বিতল বিশিষ্ট একটি নিজস্ব মালিকানার বাড়ি আছে। তার সব ভাই সরকারী চাকুরী করে। এ ব্যাপারে জিয়ারুল হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি একজন ভূমিহীন। তাই ডিসি অফিস থেকে আমার স্ত্রীর নামে এই জমিটুকু নেই। এখন ৩ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে রাখছি পুরোটা করা হবে না ভবিষ্যতে ৫ বছর পড়ে ৩ তলার কাজ শেষ করবো। এদিকে ২০১৭ সালের খাজনার রশিদ থেকে জানা যায় জমির শ্রেণী লেখা আছে ধানী। যার ক্রমিক নং-A২০১২৯৫। এলাকাবাসী কালীনদীর জায়গা দখল করে বহুতলা ভবন নির্মাণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এলাকাবাসী প্রশাসনের নিকট আরও দাবী জানিয়ে বলেন, সঠিক তদন্ত করে প্রতারনার মাধ্যমে ভুমিহীন সেজে কালী নদীর জমি লিজ নেয়া ভুমিখোরদের শাস্তির দাবী জানান।
স্থানীয় সংবাদপত্র থেকে সংগৃহীত।