কুষ্টিয়া কুমারখালী সহ পান্টির দক্ষীন অঞ্চলের ছোট-বড় সমস্থ রাস্তাগুলোই এখন রাস্তা চাষীদের দখলে। অধিকাংশ রাস্তাগুলোর উপর ধান মারাই, ভুট্রা মাড়াই, পাট ও পাটকাঠী শুকানো, ধানের খড় শুকানো সহ খড় ও পাটকাঠীর গাদা তৈরি করা হচ্ছে। আর ধান, ভুট্রা ও পাটে একাকার হয়ে আছে রাস্তার দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা। ফলে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনায় পড়ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।
পান্টি-কুমারখালী, পান্টি-কুষ্টিয়া, পান্টি-লক্ষিপুর, পান্টি-শ্লৈকূপা’সহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী চালকেরা গাড়ী চালাতে গিয়ে দূর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকেন। স্থানীয় এ সকল সড়কের সিএনজি, প্রাইভেট কার, অটোরিক্সা, পাখীভ্যান, লেগুনা, মটরসাইকেল, বাইসাইকেল চালকেরা জানান, সড়কগুলোর বিভিন্ন জায়গায় অনেক উচু করে ধান ও ধানের খড়, পাট ও পাটখড়ি’সহ বিভিন্ন ফসল কেটে এনে রাস্তায় বিছিয়ে রাখা হচ্ছে।
চালকরা আরো বলেন, সড়কের পাশের লোকজন গুলো রাস্তার উপর এমন ভাবে ফসলাদি বিছিয়ে রাখে সামান্য ব্রেক করলেই চাকা পিছলে যায়। ওভারটেক করতে গেলে দুর্ঘটনার ঝুকি আরো বাড়ে। তিন চাকার যান রাস্তায় উল্টে যায়। মালবোঝাই গাড়ীর নিয়ন্ত্রন রাখা কঠিন হয়ে যায় বলে জানান।
এই সড়ক গুলোতে নিয়মিত যাতায়াতকারীরা বলেন, সারা বছর ধরেই এভাবে দেখছি। গাছসহ ফসল রাস্তায় বিছিয়ে রাখায় গাড়ির চাকা যেমন এলোমেলো চলছে তেমনি প্রচন্ড ধুলা ও খড়কুটায় সাধারন মানুষের শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে। এদিকে বৃষ্টি হলেই সড়কে পড়ে থাকা অবশিষ্ট অংশ পচে ভয়াবহ পিচ্ছিল ধারন করে।
অনেক চালক ও পথচারিরা বলছেন, এ সমস্ত কাজ নিষেধ করতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে মার খাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ সমস্ত সড়ক গুলোকে মারাইয়ের কাজে বাড়ীর উঠানের মতো ব্যাবহার করা হচ্ছে। স্থানীয়রা আরো বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সড়কগুলো নিরাপদ রাখার মতো কোথাও কোন কর্তৃপক্ষ নেই। এতে করে প্রতিনিয়তই ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে কোন না কোন দূর্ঘটনা। এসব দূর্ঘটনায় আহতদের বেশির ভাগই হাত-পা ভেঙ্গে চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
বিশেষ করে এসব এলাকার স্কুল কলেজ গামী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই জীবনের ঝুকি নিয়ে এসকল সড়ক দিয়ে স্কুল কলেজে আসা-যাওয়া করছে।
এ ব্যাপারে সড়কের আশ-পাশের কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সড়কে ফসল মাড়াই ও শুকানোয় কারোর কোন সমস্যা হচ্ছে না। আর পাকা রাস্তায় ফসল মাড়াই করা ও শুকানো খুব সুবিধা। এতে গাড়ির চাকায় দ্রুত মাড়াই হয়ে যায়। শুকানোও যায় খুব দ্রুত।
উল্লেখ্য, গত ০৫/০৮/২০১৮ ইং তারিখে পান্টি থেকে কুষ্টিয়া যেতে সড়কে শালঘর মধুয়া রোলার মোড় নামক স্থানে ধানের খড় বিছিয়ে রাখায় মটর সাইকেল ও ভুট্রাবোঝায় ট্রলি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে মুখোমূখি সংঘর্ষে যায়গাই একজন নিহত হন।
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ইনচার্জ (ওসি) খালেকুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, রাস্তায় এভাবে ফসলাদি দেওয়া ঠিক নয়। আমি এই বিষয় টা নিয়ে অবগত ছিলাম না। বিষয়টা এখন জানলাম আমি আমার অফিসারদের বলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।
শাহিন বিশ্বাস
কুষ্টিয়া