কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বাল্য বিবাহ ও মাদকসাক্তসহ সামাজিক কর্মকান্ড নিয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার বিকেলে ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম জামাল।
এসময় তিনি বলেন, ‘‘অল্প বয়সে বিয়ে হবার কারণে অনেক সময় দাম্পত্য জীবনে ভাঙন দেখা যায়৷ তাছাড়া শারীরিকভাবে উপযুক্ত হবার আগেই সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মত্যুর ঝুঁকির মধ্যেও পড়ে তারা । অর্থাৎ সব মিলিয়ে একটি মেয়ের উপরে পরে বাল্যবিবাহের নেতিবাচক চক্রের প্রভাব৷”
বাল্যবিবাহের ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হলে, একই সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচার কার্য, জনমত গঠন, শিক্ষার প্রসার এবং আইন প্রয়োগের ব্যাপারে সরকারকে কিছু বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন উপজেলার এই প্রধান কর্মকর্তা৷
এছাড়াও তিনি বলেন, সম্প্রতি মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। শুধু শহর নয়, গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে গাজা, ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেডিনসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে সমাজ ও পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসছে, বেড়েছে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ। ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে তরুণসমাজ বিপথগামী হচ্ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ পারিবারিক ও সামাজিক উদ্যোগের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবাই। তাই আসুন আমরা বাল্য বিবাহ এবং মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সকলেই মিলে ঐক্যবদ্ধ হই।
ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা জুলফিকার হায়দার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার তামান্নাজ খন্দকার, জেলা পরিষদের সদস্য মহম্মদ আলী জোয়ার্দ্দার প্রমূখ।
সভায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, জন-প্রতিনিধি,সাংবাদিক, ইমাম,পুরোহিত,কাজী ও বিভিন্ন পেশাজীবিদের নিয়ে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে করনীয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স নির্ধারণ করা আছে ১৮ বছর৷ এর কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে হলে সেটি হবে ‘বাল্যবিবাহ’, যা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ৷ কিন্তু আইনের বিধিনিষেধ কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে এটি বন্ধ হচ্ছে না৷
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে এখনো ৬৬ শতাংশ মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার৷ কিন্তু বাল্যবিবাহের এত বিপুল সংখ্যক ঘটনা কেন ঘটছে? সম্প্রতি কুষ্টিয়ার মিরপুরে এক কিশোর ৪টি বিয়ে করে এবং বিচ্ছেদ করে গণমাধ্যমে টক অব দ্যা কুষ্টিয়ায় পরিণত হয়েছে।