কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের কুশাবাড়ীয়া গ্রামে এক পিতা তার মাদকসেবী পুত্রকে ভ্রাম্যমান আদালতে সোর্পদ করেছেন।
মাদক একটি পরিবার-সমাজ ও দেশকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। আনতে পারে সংসারে অশান্তি। মাদকসেবীদের হাতে নিজ পরিবারের সদস্যদের নিহতের ঘটনা মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন্ পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। মাদকের কালো থাবা থেকে বাঁচতে পারছে না সভ্রান্ত পরিবারের ধনীর আদরের দুলারীরাও। মাদকের আগ্রাসন এখন উচু তলা থেকে ফুটপাতের দিনমজুরের ঘর পর্যন্ত পৌছেছে অনেক আগেই। বলা হচ্ছে উচ্চু শ্রেণী মূলত দামি দামি বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবহার করলেও দিনমজুর শ্রেণীর মাদকসেবীরা মূলত সস্তা ও সহজে প্রাপ্য মাদকের দিকে বেশি ঝুকছে। মাদকসেবীদের সংখ্যা মূলত উভয় শ্রেণীতেই সমান।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের কুশাবাড়ীয়া গ্রাম। এই গ্রামের একজন সচেতন অভিভাবক আমিরুল ইসলাম। অনেক স্বপ্ন নিয়ে সন্তানদের পড়ালেখা করে মানুষ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নিজের স্বপ্নগুলোকে মাটিচাপা দিয়েছেন। এই বাবার সন্তান আশিক (১৯) ইতিমধ্যে নেশার জগতে ডুব দিয়েছে। অসৎ সঙ্গ আর বখে যাওয়া যুবকদের প্ররোচনা নেশার টাকা যোগাতে ইদানিং যেন বাবা মাকেও খুন করতে তৎপর। হতভাগা বাবা যেন নিরূপায়। স্বপ্ন নিয়ে ছেলেদের মানুষ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে এই বাবা যেন এই বৃদ্ধ বয়সে নিঃস্ব হয়েছেন। কারণ তার মূল্যবান সম্পদ আজ সম্পূর্ন মূল্যহীন সমাজের চোখে মানুষের চোখে মাদকসেবী। বখাটে।
শেষে উপায়ন্তর না দেখে নিজের নাড়ি ছেঁড়া ধনকে বাঁচাতে সহযোগিতা নিয়েছেন পুলিশের। গতকাল বিকালে মাদক থেকে ফেরাতে তার নিজ সন্তান আশিক (১৯কে ভ্রাম্যমান আদালত’র নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জামাল আহমেদ’র নিকট সোর্পদ করেন। ভ্রাম্যমান আদালত’র নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম জামাল আহমেদ আশিককে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ২২ এর (খ) ধারায় ১ এক বছরের সাজা প্রদান করেন। ভ্রাম্যমান আদালতকে সহযোগিতা করেন মিরপুর থানার এসআই এমদাদুল হক, এসআই লাল চাঁদ ও সঙ্গীয় ফোর্স। পুলিশ সাজা প্রাপ্তকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
এটি আমাদের সমাজের একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। অনেক অভিভাবক আছেন যারা নিজ সন্তানের মাদক সেবনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনতে চান না সামাজিক ও পারিবারিক মানসম্মান হারানোর ভয়ে। ঐ অভিভাবকগণ ঘূন্নাক্ষরেও বুঝতে পারেন না তার প্রিয় সন্তানটি আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে। একটা সময় সে তো তার জীবনটাকে শেষ করবেই পাশাপাশি পরিবারটিকেও ধ্বংস করে দিবে। তাই আমাদের সচেতন অভিভাবক মহলকে তার সন্তানের বন্ধু, তার চলাফেরার গতিবিধির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। তরুন ও যুবসমাজকে মাদকের করালগ্রাসে নিমজ্জিত না হয়ে নিজের জীবনকে ভালবাসতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবারের গুরুজন ও যারা সিনিয়র সদস্য রয়েছেন তাদের বন্ধুসুলভ আচরনের সাথে মিশে গিয়ে তাদের সমস্যা, সুবিধা-অসুবিধা গুলো জানতে হবে। অনেক তরুন তরুনী বয়ঃসন্ধিকালে সিধান্তহীনতায় ভুগে থাকেন। এসময় তাদের পাশে থেকে মানষিক সাপোর্ট দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরী। মাদক নিমূর্লে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একমাত্র পারে স্বনির্ভর ও সূখী সম্বৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গড়তে।