মায়ের বিয়ে হয়নি। হয়নি বাসর শয্যা। লাল নীল আলোয় স্বামীর সোহাগ পায়নি রাহাতন খাতুন। এরই মধ্যে কোল জুড়ে আসে সন্তান। সেই সন্তান এখন ১৮ বছরের যুবক। কিন্তু পিতাকে সে দেখেনি, কোনদিন মধুর ডাক “আব্বা” নাম ধরেও ডাকতে পারেনি। কিন্তু মা জানে তার বাবা কে?
ঝিনাইদহের মহেশপুর পিতার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে এমন এক যুবক। তার নাম সুমন হোসেন। সমাজপতিরা তার স্বীকৃতি আদায় করার কথা বলে বছরের পর বছর ঘুরিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সমাজে সুমন কি পাবে না তার পিতার পরিচয়? মহেশপুরের বলিভদ্রপুর গ্রামের রাহাতন খাতুন গরীব অসহায় মহিলা হিসেবে কাজ করতেন পরের বাড়ী। ১৮ বছর আগে এনজিওর মাধ্যমে মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় লাগানো হয়েছিল তুত গাছ। এনজিওর লাগানো এই গাছ পাহারা দিন রাহাতন। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধা পর্যন্ত রাস্তা পাহারা দিতে গিয়ে কুনজরে পড়ে গ্রামের সমাজপতি লিয়াকতের। তাকে বিয়ে করবে বলে একাধীকবার শাররিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। গর্ভবতী হয়ে পড়ে রাহাতন। কিন্তু লম্পট লিয়াকত আর বিয়ে করেনি। রাহাতন একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। রাহাতন বিয়ে না করে ছেলে কে মানুষ করতে থাকেন।
সুমন হোসেন জানান, আমার ৬/৭ বছর বয়স হলে গ্রামের সবাই আমাকে জারজ সন্তান বলে থাকে। লিয়াকতের অবৈধ্য সন্তান বলেও অনেকে টিটকারী মারে। আমি মায়ের কাছে পিতার পরিচয় জানতে চাই। মা আমাকে লিয়াকতের কথা বলেন। এরপর তেকেই আমি জন্মদাতা পিতা হিসেবে স্কুল ও অন্যান্য জায়গায় লিয়াকতের নাম ব্যবহার করি।
সুমন জানায়, আমার তো কোন দোষ নেই। লিয়াকত আমার মায়ের সাথে সম্পর্ক করে বিয়ের নাম করে মেলামেশা করতেন। মা বলেছে লিয়াকত তোমার পিতা। আমার এখন পিতার পরিচয় পাওয়ার প্রয়োজন। মহেশপুর থানার এস আই বজলুর রহমান জানান, ওসি সাহেবের নির্দেশে আমি তদন্ত করছি। সুমনকে সাথে করে তদন্ত করেছি। বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে।
সুমন হোসেন জানান আমার কাছে মেহেদী নামে এক নেতা ৩০ হাজার টাকা এনেছিলেন। আমি টাকা নিতে রাজী হয়নি। তিনি জানান আমার পিতার পরিচয়ের মূল্য ৩০ হাজার টাকা বলে বিচারকরা মনে করছেন। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন আমি আর বিচার চাই না। ঢাকায় চলে যাবো।