দেশজুড়ে যখন চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে ডাক্তারের ভুমিকা এবং আচরন নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে তখন কুষ্টিয়ার ৩ জন ডাক্তার মানবিকতার এক অনন্য নজির তৈরী করলেন। বিনা পয়সায় তারা দরিদ্র এক শিশুর অপারেশন করলেন একটি বেসরকারি ক্লিনিকে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৬ তারিখ শুক্রবার সকালে। প্রতিদিনের মতন কুষ্টিয়া কুমারখালীর ছেঁউরিয়া এলাকার শিশির রহমান (১২) ফুটবল খেলতে গিয়েছিল লালন একাডেমির মাঠে। ঘটনাক্রমে ফুটবলে হেড মারতে গিয়ে তার এক বন্ধুর মাথা এসে লাগে চোয়ালে। এতে করে চোয়ালের বাঁদিকের হাড় ভেঙে গুরুতর আহত হয় শিশু শিশির।
সাথে সাথে তার বাবা মা তাকে নিয়ে যায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এক্সরে প্লেট দেখে সেখানকার জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে রেফার্ট করে ঢাকায়। কিন্তু, অর্থাভাবে তার বাব মার পক্ষে ঢাকা নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
অতঃপর শিশুটিকে নেওয়া হয় কুষ্টিয়া শহরের একাধিক দন্ত চিকিৎসকের কাছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এই চিকিৎসা করতে রাজি হলেও যে পরিমান টাকা চেয়েছিলেন তা যোগাড় করা সম্ভব ছিল না দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে।
পরে জ্যোতি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী প্রধান সৈয়দা হাবিবার মাধ্যমে শিশুটির সমস্যা এবং পরিবারটির অসহায়ত্যের কথা জানতে পারেন কুষ্টিয়া শহরের দন্ত চিকিৎসক ডাঃ জুলকার নাইন, ডাঃ ফরহাদ মোঃ অলিউল ইসলাম (আশিক) ও ডাঃ সৈয়দ ইমতিয়াজ হোসেন (ইমরান)।
তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন বিনা পয়সায় শিশুটির চিকিৎসা করার।অতপর গতকাল শহরের ‘কুষ্টিয়া ডেন্টাল’ এ বেলা ১২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ডাঃ জুলকার নাইন ও ডাঃ ফরহাদ মোঃ অলিউল ইসলাম (আশিক) এর তত্বাবধানে ডাঃ সৈয়দ ইমতিয়াজ হোসেন (ইমরান) অক্লান্ত পরিশ্রম করে আই এম এফ পদ্ধতিতে শিশুটির চোয়ালের হাড় সঠিকভাবে জোড়া লাগতে সক্ষম হন।
আর এরই মাধ্যমে ৩ জন ডাক্তার মানবিকতার অনন্য এক নজির সৃষ্টি করলেন কুষ্টিয়াতে। শিশির ছেঁউরিয়া এলাকার আতিয়ার রহমান এবং শিরিন আক্তারের একমাত্র সন্তান। আতিয়ার রহমান লালন একাডেমি পরিচালিত মিউজিয়ামের তত্বাবধায়ক আর শিরিন আক্তার লালন একাডেমির নিয়মিত শিল্পী।