বড় শিং, নাদুস, নুদুস বিভিন্ন রংয়ের ৩২টি ষাঁড় লড়াই করতে ছিল প্রস্তুত। ঘড়ির কাটা তখন ১২ টা ছুঁই ছুঁই। শুরু হয়ে গেল লড়াই। কেউ কারো থেকে কম যায় না। এলাকার মান রক্ষায় প্রাণপণে লড়ছে ষাড়গুলো। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ ষাঁড়ের কাছে ধরাশয়ী হয়ে মাঠের বাইরে পালিয়ে গেলেই লড়াইরত অপর ষাঁড়টি বিজয়ী হিসেবে পরের রাউন্ডে প্রতিপক্ষের সাথে আবারো লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়।
মণিরামপুর উপজেলার গ্রামীন জনপদ নেবুগাতী গ্রামবাসির আয়োজনে প্রায় ৩০ বছর ধরে চলে আসছে এই ষাঁড়ের লড়াই। নেবুগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এই লড়াইয়ে বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, মাগুরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকে একটানা সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত চলে এই লড়াই। নক আউট পদ্ধতিতে লড়াই শেষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগ্যবান বিজয়ী ষাঁড় মালিকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে নগদ অর্থ যথাক্রমে ৭, ৫ ও ৩ হাজার টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এই ষাড়ের লড়াইকে ঘিরে এলাকায় উৎসবের আমেজ। হাজার হাজার বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। যেন বড় উৎসব পার্বনকে ঘিরে মেলা বসেছে। খাবার, খেলনাসহ দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। দোকানগুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভীড়। কোন অনাংখিত ঘটনা এড়াতে স্কুল মাঠের চারিপাশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন আয়োজকরা। মাঠের চারিদিকে উৎসুক জনতার ব্যাপক ভীড়।
লড়াই দেখতে আসা পাঁচবাড়িয়া গ্রামের ষাটোর্ধ রীনা মন্ডল বলেন, প্রতি বছর লড়াইকে ঘিরে গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারে আত্মীয়-স্বজনের সমাগম ঘটে। বেশ মজাও হয়। সবাই মিলে এই লড়াই দেখতে চলে এসেছেন তারা।
লড়াই শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে নগদ অর্থ তুলে দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিপদ ভঞ্জন পাঁড়েসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।