ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু জাকির নায়েককে আগামী দুয়েকদিনের মধ্যেই ভারতে ফিরছেন বলে জানা গেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এডিটিভির খবরে এ তথ্য জানা গেছে। কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মেদ রাবি আবু বাকার এনডিটিভিকে জানান, সে আজ রাতে দেশের বাইরে আছে। আমার বিশ্বাস সে ভারতের একটি ফ্লাইট ধরবে।
তবে এ খবরকে পুরোপুরি অসত্য বলে দাবি করেছেন জাকির নায়েক। তিনি বলেন, আমার ভারত ফিরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সেখানে গেলে আমি অবিচারের মুখোমুখি হতে পারি বলে আশঙ্কা রয়েছে। নিরাপদ বোধ করলেই আমি মাতৃভূমিতে ফিরে যাব।
৫২ বছর বয়সী জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। ধর্ম প্রচারের নামে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। একই সঙ্গে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে জাকিরের বিরুদ্ধে।
তার দেয়া বিভিন্ন বক্তব্যেও প্রকাশ পায় উগ্রবাদ। পেশায় চিকিৎসক হলেও সমকামীদের প্রাণে মেরে ফেলার কথা বলেছিলেন জাকির নায়েক।
সূত্রের খবর এহেন এক অভিযুক্তের মাথার উপর থেকে হাত সরিয়ে নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। তাহলে কি জাকির ভারতবর্ষে ফিরছে।
বুধবার মালয়েশিয়া সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে জাকির নায়েকের পাশে থাকছে না ওই দেশের সরকার। অতএব তার ভারতে ফেরা ছাড়া উপায় নেই।
কিন্তু জাকিরের ভারতে ফেরার খবর সম্পূর্ণ ভাবে ভ্রান্ত বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী। ফলে এই বিতর্কিত ধর্ম প্রচারকের ভারতে ফেরত আসা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
২০১৬য় ঢাকাতে হোলি আর্টিজেন বেকারিতে জঙ্গি হামলার সঙ্গে সরাসরি যোগ পাওয়া গিয়েছিল জাকির নায়েকের। পিস টিভি নামে জাকিরের নিজস্ব টিভি চ্যানেলের বিদ্বেষ মূলক ভাষণই জঙ্গিদের উস্কে দিয়ছিল বেকারিতে হামলা করতে বলে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ভারত। তদন্তে উঠে আসে একাধিক ভয়াবহ তথ্য। এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু বিদ্বেষ মূলক ধর্মবানী প্রচার করে সন্ত্রাসবাদীদের উদ্বুদ্ধ করে। তার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা সরাসরি সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ সাহায্য করে। এমনকি জেহাদি কাজের তালিম দেওয়া হয় ওই সংস্থায়। ইতিমধ্যেই ভারত ও বাংলাদেশ সরকার তার টিভি চ্যানেল পিসটিভি ও তার সংস্থা ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
২০১৬ থেকে জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় আত্মগোপন করে আছে। তাকে দেশে ফেরানোর জন্য দীর্ঘ দিন ধরে কথা বলছে ভারত সরকার। মালয়েশিয়া সরকার বলেছিল ইন্টারপোল নোটিশ বা রেড কর্নার নোটিশ জারি করতে। যদিও ভারত সেটা এখনও করে উঠতে পারেনি।
কিন্তু মালয়েশিয়া সরকারের বক্তব্য কি, আবার মোস্ট ওয়ান্টেড জাকিরের দেশের ফেরার জল্পনা উস্কে দিল? এখন দেখার এই জল্পনা কি আদৌ সত্য। যদি সেটা হয় তবে তদন্তকারীদের জন্য অবশ্যই এটা একটা বড় সাফল্য।
হলি আর্টিজানে হামলার পর তার বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ উঠলে ২০১৬ সালে ভারত ছেড়ে যান জাকির নায়েক এবং তখন থেকেই পুত্রজায়ায় বসবাস করছিলেন। সেখানে স্থায়ী বাসস্থানও পেয়েছেন তিনি।