প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল।
মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান ছয় নেতার নামে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান তুহিন ঝিনাইদহ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বলে জানা গেছে।
মামলার আরজি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বাদী শামসুজ্জামান তুহিন গেল রবিবার বিকালে ক্যাম্পাস-পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজারের হাজি মার্কেটে অফিসে বসে ছিলেন। তখন ইবি ছাত্রলীগের সাবেক বর্তমান ছয় নেতা এসে তার কাছে চাঁদা দাবি করে। এ সময় মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এতে প্রাণভয়ে তিনি তার প্যান্টের পকেট থেকে ৫০ হাজার টাকা বের করে দেন। ঐ সময় আসামিরা বাকি টাকা সাত দিনের ভেতর না দিলে হত্যার হুমকি দেয় তাকে। তিনি বাকি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আসামিরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিকাদারি করে চাঁদার টাকা না দিলে কাজ করতে দেব না।
মামলার আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আল আমিন জোয়ার্দ্দার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মাদ আলী শিমুল, নাজমুল, সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শিশির ইসলাম বাবু ও সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালন।
উল্লেখ্য মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, মামলার বাদী শামসুজ্জামান তুহিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ষষ্ঠ তলা সম্প্রসারণের কাজ দেখাশোনা করছেন। এ কাজটি করছে সনেপ ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আসামিরা এ কাজেরই চাঁদা দাবি করেছে বলে বাদী পক্ষ ধারণা করছেন।
এ দিকে, মামলার বাদী শামসুজ্জামান তুহিনও চাঁদাবাজির মামলার আসামি হিসেবে পালাতক রয়েছেন। গত শুক্রবার তুহিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ইবি থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন ইবির প্রাক্তন ছাত্র ও ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আলামীন জোয়ার্দ্দার।
অন্যদিকে মামলার আসামিরা দাবি করেন- তাদের ফাঁসানোর জন্য কোনো একটা মহল তাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলাটি করেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্রলীগের একাংশ। এ সময় তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং পরবর্তীতে প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। পরে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারীর সঙ্গে উপাচার্য কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে।
এ সময় উপাচার্য তাদের বলেন, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ কোনো উন্নয়নমূলক কাজে যদি কেউ চাঁদা দাবি করে, তাহলে অবশ্যই আগে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মামলা হলে বিষয়টি আমরা দেখব।
মামলার আসামি ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক এবং বর্তমান বিদ্রোহীদের নেতা মিজানুর রহমান লালন বলেন, মামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রক্টর অপসারণের আন্দোলনে সফলতা লাভ করায় এ মামলা করানো হয়েছে। মামলার সময় এবং দিন যেটা উল্লেখ করা হয়েছে একই সময়ে আমি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলাম প্রশাসন ভবনের সামনে, সিসি ক্যামেরা দেখলেই বুঝা যাবে।
মামলার বাদী শামসুজ্জামান তুহিন বলেন, আমি ছাত্রলীগের কারো বিরুদ্ধে মামলা করিনি। যারা আমার কাছে চাঁদা চাইতে এসেছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি শৈলকূপা থানায় মামলার কপি পাওয়া যাবে, ওখানে সব পেয়ে যাবেন।