বলিউডের পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘পদ্মাবতী’ ছবি নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। ১ ডিসেম্বর ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় ছবিটি এখনো মুক্তি পায়নি। ‘পদ্মাবতী’ এখন ভারতের ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের দপ্তরে পড়ে রয়েছে। ১ ডিসেম্বর ‘পদ্মাবতী’র পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি ও ছবির প্রযোজক সংস্থা ভিয়াকম ১৮ মোশন পিকচার্স ঘোষণা দিয়েছিল, তারা এই ছবির বিতর্ক এড়াতে প্রকাশ করছে দ্বিতীয় ট্রেলার। তাতেও অবসান হয়নি বিতর্কের।
এবার ‘পদ্মাবতী’র বিতর্ক অবসানের জন্য ভারতের সেন্সর বোর্ড নতুন করে একটি নতুন প্যানেল গড়েছে। এই প্যানেলে রাখা হয়েছে ইতিহাসবিদ এবং ভারতের বিভিন্ন রাজপরিবারের সদস্যদের। তারা খতিয়ে দেখবে এই ছবিতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে কি না। এই প্যানেলের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেন্সর বোর্ড ছবিটির মুক্তি দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। বলা হয়েছে, ছবিটির কাহিনি যেহেতু রাজা–রানিদের নিয়ে, তাই রাজপরিবারের সদস্যদের প্যানেলে রাখা হয়েছে। যেন তাঁরা যাচাই–বাছাই করে দেখে নিতে পারেন এই ছবিতে রাজপরিবারের কাহিনি ঠিকমতো তুলে ধরা হয়েছে কি হয়নি।
যদিও ছবিটির পরিচালক কিছুদিন আগে ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর ছবি নিয়ে যেন ফের বিতর্ক দানা বাঁধতে না পারে, সে জন্য ট্রেলার থেকে আলাউদ্দিন খিলজির চরিত্রটি বাদ দেওয়া হবে । সেই জায়গায় দেখানো হবে রানি পদ্মাবতী এবং রাজপুত রানা রতন সিংয়ের কাহিনির খণ্ডচিত্র। তা ছাড়া এবারের ট্রেলারটি এমনভাবে তৈরি করা হবে, যার মধ্য দিয়ে বেশি করে উঠে আসবে রাজপুতদের বীরত্বের গৌরবময় কাহিনি।
প্রসঙ্গত, ‘পদ্মাবতী’ চলচ্চিত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে এবং রাজপুতদের সম্মানহানি করা হয়েছে, এ অভিযোগে বেশ কিছুদিন ধরে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চালাচ্ছে রাজপুত সংগঠন করনি সেনা এবং বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন। ভাঙচুর, অস্ত্র মিছিল, পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রীদের হুমকি দেওয়া কিছুই বাদ যায়নি।
যদিও ‘পদ্মাবতী’র বিতর্ক উঠেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টেও। সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দিয়েছিলেন ছবিটির মুক্তির বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে সেন্সর বোর্ড।
এর আগে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় সংসদের চলচ্চিত্রবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়ে পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি বলেছেন, এই ছবির গল্প তাঁর কল্পনানির্ভর। সুতরাং ইতিহাস বিকৃত করার কোনো প্রশ্ন ওঠে না। তবে কোনো কথাই বিক্ষোভকারীদের মন গলাতে পারেনি। তবে ওই বৈঠকের পর সেন্সর বোর্ডের প্রধান প্রসূন জোশি জানিয়ে দিয়েছেন, বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতের পরই ‘পদ্মাবতী’ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।