ছেলেধরা গুজব আতঙ্ক এখন সর্বত্র। আর এ গুজব আতঙ্ক ছোট থেকে বড় এমনকি কোমলমতি শিশুদের মাঝেও বিরাজ করছে। ছেলেধরা গুজবে হামলার হাত থেকে যখন রক্ষা পাচ্ছেন মানষিক প্রতিবন্ধীরাও, তখন কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে আজানা এ গুজব আতঙ্কে। সেইসাথে গুজবে ভীতসন্ত্রস্থ ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে গ্রামের অসহায় সাধারণ পরিবার। যারফলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক শিশু। আবার অনেক শিশুর পরিবাররাও যেতে দিচ্ছেন না তার শিশু সন্তানকে। যে সকল শিশুকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের পরিবারের সদস্যরা সার্বক্ষনিক স্কুলের গন্ডির মধ্যে অবস্থান করছেন। এমন উদ্বিগ্ন অবস্থার উত্তোরণ দ্রুত হওয়া প্রয়োজন এবং গুজব রটনাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা জরুরী বলে অভিভাবকদের অভিমত।
শরীফুল ইসলাম ॥ শুধুমাত্র কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিভিন্ন গ্রামে বা বাজারে, হাটে কিংবা শহরে নয় এখন সর্বত্র একটা গুজব সেটা ছেলেধরা। কোন অপরিচিত নারী বা পুরুষ এলাকায় গেলে তার নাম পরিচয় না জেনেই শুরু হচ্ছে গণপিটুনি। আবার মানষিক ভারসাম্যহীন কোন নারী বা পুরুষ কোন এলাকায় গেলে তার অসংলগ্ন আচরণের কারণে তাকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়েছে শিশুদের ওপর। কোন অভিভাবক তার শিশুকে স্কুলে দিতেও ভয় পাচ্ছেন। কেউ স্কুলে নিয়ে গেলেও সেও থাকছেন স্কুলের আঙিনায়। তাই এই অজানা আতঙ্কের নিরসন হওয়া উচিৎ বলে মনে করে বাবলুর রহমান নামে এক অভিভাবক।
আবার গুজব আতঙ্ক বিরাজ করছে শিশুদের মধ্যেও। যার কারনে তারাও স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। এমনটাই জানালেন মজিবর রহমান নামে অভিভাবক। তিনি জানান, তার নাতি ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যেতে চাইলে সে উল্টো বলে এখন স্কুলে যাওয়া যাবেনা ছেলে ধরা আছে ধরে নিয়ে যাবে।
এদিকে ছেলেধরা গুজবের ফলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে প্রাথমিক স্কুলগুলোতে। এ গুজবে অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না বলে জানালেন শিতলাইপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারহানা নাজনীন।
তবে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে ঈশর্^ানিত হয়ে উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ব্যহত বা অন্যদিকে ধাবিত করার জন্য একটি কুচক্রী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজম খান। তিনি বলেন, গুজবে কান দিবেননা, কোন অপিরিচিত লোক এলাকায় ঘোরাফেরা করলে তৎক্ষনাত পুলিশকে খবর দিবেন। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেননা। গুজব বা অপপ্রচার যাইহোক না কেন, এর কুফল ভোগ করছেন নিরীহ সাধারণ মানুষ বা মানষিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। এর থেকে দ্রুত পরিত্রান পাওয়া দরকার। নইলে এর প্রভাবে ফয়দা লুটবে কোন অপশক্তি। এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।