নিউ ইয়ার্ক প্রতিনিধি মুনসী মোঃ সাজেদুর রহমান টেনটু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক নির্বাচনী উপদেষ্টা জর্জ পাপাডোপোলসকে গতকাল শুক্রবার কারাদণ্ড দিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসি আদালত। তাঁকে ১৪ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে এফবিআইয়ের কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ায় তাঁকে এ দণ্ড দেওয়া হয়। রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের কয়েকজনের বৈঠকের সময় নিয়ে মিথ্যা বলায় গত অক্টোবরে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রমাণ করতে গিয়ে প্রথম ট্রাম্পের এই সাবেক সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গতকালের রায়ে বলা হয়, পাপাডোপোলসকে ১২ মাসের নজরদারিতে রাখা হবে। তাঁকে ২০০ ঘণ্টা কমিউনিটি সার্ভিস দিতে হবে। একই সঙ্গে সাড়ে নয় হাজার মার্কিন ডলার জরিমানাও গুনতে হবে।
বিচারকাজ চলার সময় ৩১ বছর বয়সী পাপাডোপোলস আদালতকে বলেন, তিনি একজন ‘দেশপ্রেমিক আমেরিকান’। মিথ্যা বলে তিনি ভুল করেছেন।
পাপাডোপোলস আদালতকে বলেন, ‘তাঁর পুরো জীবন ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে’। আশা প্রকাশ করেন, নিজেরে মুক্ত করতে দ্বিতীয় সুযোগ পাবেন। তিনি তাঁর বক্তব্য ‘এই তদন্তের বৈশ্বিক প্রভাব আছে এবং সত্যের গুরুত্ব আছে’—এ কথা বলে শেষ করেন।
২০১৬ সালের মার্চে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে শিকাগোতে-জন্ম পাপাডোপোলস লন্ডনে একজন পেট্রোলিয়ামে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতেন। প্রচার শিবিরে ঢুকেই তিনি শিগগিরই রহস্যজনক মল্টিয় একাডেমিক জোসেফ মিফসুদের সঙ্গে দেখা করেন।
ওই অধ্যাপক তাঁকে বলেছিলেন, রাশিয়ার কাছে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ‘নোংরামি’র প্রমাণ হিসেবে হাজার হাজার ই-মেইল রয়েছে।
২০১৬ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পানশালায় গল্প করতে করতে পাপাডোপোলস অধ্যাপক মিফসুদের সঙ্গে বেঠকের বিষয়ে বলেছিলেন। এর দুই মাস পর ই-মেইলগুলো প্রকাশিত হওয়ার পর ওই রাষ্ট্রদূত মার্কিন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
পাপাডোপোলস ট্রাম্প ও প্রচার শিবিরের জাতীয় নিরাপত্তা দলের অন্য সদস্যদের ২০১৬ সালের নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজনের প্রস্তাব দেন।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে পাপাডোপোলসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এফবিআই। তখন তিনি দাবি করেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ট দুজনের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করেছেন, তা-ও প্রচার শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে। কিন্তু সত্যিটা হলো, তিনি প্রচার শিবিরে যোগ দেওয়ার পর দেখা করেছিলেন।
এই দুজনের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। পাপাডোপোলসের বিশ্বাস ছিল, এই নারীর সঙ্গে রাশিয়া সরকার যোগসূত্র রয়েছে।
গতকাল আদালতের বাইরে পাপাডোপোলসের আইনজীবী টমাস ব্রিন বলেন, তাঁর মক্কেল বোকা এবং এফবিআইয়ের কাছে বোকার মতো মিথ্যা বলেছেন।
কিন্তু অ্যার্টনি বলেছেন, তদন্তে বাধা দিয়ে পাপাডোপোলস যা করছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি অপরাধ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এই তদন্তকে ‘উইচ হান্ট’ ও ‘ভুয়া খবর’ বলে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছেন।