ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিক্রয় ও বাজার স¤প্রসারণের লক্ষ্যে শুরু হওয়া ৭ দিনব্যাপী কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা জমে উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার মেলা প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই দেখা গেছে নানান বয়সী মানুষের ভিড়। বেড়েছে গতকালের তুলনায় বিকিকিনি। কুষ্টিয়া কালেক্টর চত্বর প্রাঙ্গণে ৭ দিনব্যাপি শুরু হওয়া এ মেলার আজ ৩য় দিন চলছে।
মঙ্গলবার বিকেলে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই মেলায় আসছেন। কেউ কেউ মেলার স্টল ঘুরে ঘুরে পছন্দের কেনাকাটা করছেন। আবার কেউ শুধুই দর্শনার্থী হিসেবে ঘুরছেন। সব মিলে মেলায় পুরুষের তুলনায় নারী ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। মেলায় কুষ্টিয়াসহ আশপাশ জেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অংশ নেয়া ৫৫টি এসএমই প্রতিষ্ঠানের সাজানো স্টলগুলোতে পাটজাত পণ্য, হ্যান্ডিক্রাফটস, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ইলেকট্রনিক্স, পোশাক, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যারসহ অন্যান্য সেক্টরের স্বদেশি পণ্যের বিশাল সমারহ রয়েছে।
মেলায় ঘুরতে আসা নাদিরা খানম দেশীয় পণ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মেলার সকল পণ্যই স্বদেশী কিন্তু দাম বাজারের চেয়ে এখানে কিছুটা বেশি। তবে সহনশীল। মূলত স্বদেশী পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিক্রয় ও বাজার স¤প্রসারণের লক্ষ্যে কুষ্টিয়াতে প্রথমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বরিশাল থেকে আসা মেঘের ছোয়া নামের ষ্টলের স্বত্বাধীকারী নন্দিতা ও তমাল জানান, আমাদের হ্যান্ডিক্রাফটস গুলো আমরা নিজেরাই তৈরী করে থাকি। মেলায় বেশ চাহিদা রয়েছে। দামে সস্তা হওয়ার কারনে বেশ সাড়া পড়েছে ।
চুয়াডাঙ্গা থেকে এই পণ্য মেলায় আসা জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং ষ্টলের প্রোপ্রাইটার মো: ওলিউল্লাহ জানান, তাদের কৃষি সেক্টরের নানান ধরনের মেশিন নিয়ে এসেছে মেলায়। এতে করে সম্পুর্ন দেশীয় তৈরী যন্ত্রপাতি বাজারজাতকরণে কৃষি ও কৃষিক্ষেে ব্যাপক অবদান রাখবে বলে জানান তারা।
রাজশাহী থেকে আনজুমান আরা পারভীন লিনা ফ্যাশন হাউজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান জানান, তার নিজের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এসেছে মেলাতে।
জোতি এগ্রোর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক উন্মে সৈয়দা হাবিবা বলেন, আমাদের উৎপাদিত বিশুদ্ধ ও মানসম্মত মসলা, বিভিন্ন জাতিয় আচার, ও হাতের তৈরী পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
মৌবনের ষ্টলে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন ষ্টলে গিয়ে কেনাকাটার পাশাপাশি খাবার খেতেও স্বচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কুৃষ্টিয়া বিখ্যাত খাবারের অন্যন্য প্রতিষ্ঠান মৌবনের রুচিসম্মত খাবার ক্রেতাদের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
গত সোমবার মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। মেলায় দর্শকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। মঙ্গলবার সকালে মেলা শুরুর পর থেকেই আসতে শুরু করেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। এ
দর্শনার্থী ও ক্রেতারা কেউ মেলায় প্রবেশ করছেন, আবার কেউ কেনাকাটা সেরে বের হয়ে যাচ্ছেন। আর মেলা প্রাঙ্গণ যেন মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা, রাঙ্গামাটি, রাজশাহী, পাবনা, নাটোর, বরিশাল ও বান্দরবান জেলা থেকে আসা সাত দিনব্যাপি ‘আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা’য় ৫০টি স্টল অংশ গ্রহণ করেছে।
মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জেলা প্রশাসন, বিসিক কুষ্টিয়া, দি কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এনসিসিআই), নাসিব ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।
উদ্যোক্তাদের পণ্যের বাজারজাতকরণে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এসএমই মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।এছাড়াও কুপনের ব্যবস্থা রয়েছে মেলায়।বিনামল্যে এই কুপন সংগ্রহ করে নির্ধারিত বক্সে রাখতে হবে। প্রতিদিন লটারী ড্র অনুষ্ঠিত হবে। ভাগ্যবান ৫জনকে পুরস্কার প্রদানেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে।