জীবননগর আন্দুলবাড়িয়ার উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলে দু’সন্তানের জনক বিশারত আলী বিশার শরীর ঝলসে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার উত্ত্যক্তের শিকার ওই মাদরাসা শিক্ষিকা গৃহবধূ ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ঝলসে দেয়।
গতকাল শনিবার বিকেলে অজ্ঞাত তরল পদার্থ দিয়ে ঝলসে দেয়া হয়। বিশাকে আহতাবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ক্ষুব্ধ গৃহবধূর দাবি ডাল রান্না করা গরম পানিতে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে ছুড়ে মারে। অপরদিকে, চিকিৎসক অ্যাসিডের পোড়া বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া ম-লপাড়ার রুস্তম আলী ম-লের ছেলে বাজারের বিশিষ্ট ভুষিমাল ব্যবসায়ী বিশারত আলী বিশা ২ সন্তানের জনক। দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশী মাদরাসা শিক্ষিকা গৃহবধূকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বিশারত আলী বিশার স্ত্রী বাসায় অনুপস্থিত থাকার সুযোগে ওই গৃহবধূকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। এ সময় ওই গৃহবধূ অজ্ঞাত তরল পদার্থ বিশার শরীরে ছুড়ে মারে। এতে তার শরীরের কিছু অংশ ঝলসে যায়। আহতাবস্থায় স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্র্তি করেন।
এসময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোনিয়া আহম্মদ জানান, প্রাথমিক চিকিৎসায় অ্যাসিডের পোড়া বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার শরীর থেকে অ্যাসিডের পোড়া গন্ধ বের হচ্ছে। অপরদিকে, গৃহবধূ পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করছেন, ডাল রান্না করা গরম পানির মধ্যে মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে লম্পটকে ঝলসে দিয়ে উচিত শিক্ষা দিয়েছি। এ ঘটনার পর বিশারত আলীর ভাগ্নে জাহাঙ্গীর আলম ওই গৃহবধূর ভাইয়ের ওপর চড়াও হয়ে টানা হেঁচড়া ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বাড়ির সামনে উৎসুক জনতা ভীড় করতে থাকে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জীবননগর থানার অফিসার ইনর্চাজ মাহমুদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় বাসিন্দাদের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার, ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম, প্রতিবেশী বদরুদ্দিন বুদো, আব্দুল আলিমসহ অনেকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অভিন্ন ভাষায় বলেন, বিশারত আলী বিশা দীর্ঘদিন যাবত ওই গৃহবধূকে উত্ত্যক্ত করায় কয়েকবার সালিস বৈঠক করা হয়েছে। তার অত্যাচারে প্রতিবেশীরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। সালিস বৈঠকে বিশারত আলী ক্ষমা চেয়ে আর উত্ত্যক্ত করবে না, এমন অঙ্গীকার করায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ঘটনাটি আপোষ-মিমাংসায় নিষ্পত্তি করা হয়।
সূত্র জানায়, কথিত এ আপোষ-মিমাংসা করার ঘটনায় কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশনকালে ওই গৃহবধূর বাড়ি থেকে গরম পানির একটি পাতিল উদ্ধার করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।