গোলাপ স্তুতিতে কত কথাই না লিখেছেন কবিরা; এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন, রূপসী এ ফুলের গোপন রহস্য জেনে গেছেন তারা।
ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, যুক্তরাজ্যের ৪০ গবেষকের একটি দল সম্প্রতি প্রথমবারের মত গোলাপের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করেছেন। তাদের গবেষণা প্রবন্ধটি গত মাসের শেষে প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার জেনেটিকস।
ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞানীদের এই দলটি তাদের আট বছরের চেষ্টায় গোলাপের মোট ৩৬ হাজার ৩৭৭টি জিন চিহ্নিত করেছেন, যার মধ্যে এর সুবাস আর রঙের জন্য দায়ী জিনগুলোও রয়েছে।
গবেষকরা আশা করছেন, জিন-নকশা জানা সম্ভব হওয়ায় আগামীতে সুবাস আর রঙে গোলাপ হয়ত হয়ে উঠবে আরও বৈচিত্র্যময়।
বিবিসি লিখেছে, গোলাপের জিন-নকশা অবাক করেছে বিজ্ঞানীদেরও। তারা বলছেন, জিনোম সিকোয়েন্সের দিক দিয়ে গোলাপ স্ট্রবেরির খুব কাছের আত্মীয়।
এই গবেষক দলের প্রধান ফ্রান্সের ইএনএস ডি লিয়ঁর বিজ্ঞানী মোহাম্মদ বেনদামান বিবিসিকে বলেন, গোলাপের ইতিহাসের আদ্যোপান্ত নিয়ে রীতিমত একটা গ্রন্থ যেন তারা আবিষ্কার করে ফেলেছেন।
“এ এমন এক গ্রন্থ, যা আমাদের গোলাপকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে। আমাদের বলবে গোলাপের ইতিহাস, এর বিবর্তন আর বাগানের গাছ হয়ে ওঠার গল্প।”
কয়েক হাজার বছর আগে সম্ভবত চীনারাই প্রথম বাগানে গোলাপ চাষের সূচনা করেছিল। রোমান যুগে সুগন্ধি আর রঙিন কাগজ তৈরির জন্য মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক হারে গোলাপের চাষ হত।
নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, ড. বেনদামান আর তার সহকর্মীরা তাদের গবেষণা শুরু করেছিলেন Rosa chinensis প্রজাতির গোলাপ নিয়ে, ইউরোপে যার নাম ‘ওল্ড ব্লাশ’। চীন থেকে ওই জাতের গোলাপ ইউরোপে গিয়েছিল অষ্টাদশ শতকে।
বিজ্ঞানীরা বলছে, এখন এমন গোলাপের জাত তৈরি করা সম্ভব হবে, যা ফুলদানিতে তাজা থাকবে আরও বেশিদিন; সেই সঙ্গে থাকবে পোকামাকড়মুক্ত।
এই গবেষণা রোজেসি পরিবারের অন্যান্য ফল- যেমন আপেল, নাসপাতি, স্ট্রবেরির জিন-বিন্যাসের উপরও আলো ফেলেছে।