কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গোবরা-চাঁদপুরে জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়ার স্ত্রী গৃহবধু ছবিরন (৩৫) খুনের এক বছর অতিবাহিত হলেও ঘাতক জিয়া আটক হয়নি, মূল রহস্য এখনো উদঘাটন হয়নি। এদিকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে এলাকাছাড়া নিরাপরাধ কিছু মানুষ। তাদের তার স্ত্রী-সন্তানের নামও বাদ যায়নি মিথ্যা মামলা থেকে।
হত্যার পর ছবিরন খাতুনের পিতা আব্দুল হামিদ শেখ বাদী হয়ে কুষ্টিয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার সেশন নং ১৭৮/১৭। মামলায় নিহতের স্বামী ঘাতক জিয়াকে প্রধান আসামী করে এবং সহযোগিতায় আরো ৫জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৬জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর থেকেই ঘাতক জিয়া আত্মগোপনে চলে যায়। মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে কামাল হয়ে যায় ফেরারী। বাকীরা কোর্ট থেকে জামিনে মুক্ত হয়।ছবিরনের ভাগ্যে কি ঘটেছিল সেই রাতে?
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, নিহত ছবিরন যে দিন নিহত হয়, সেই রাতে আব্দুল হাই তার পাশ্ববর্তী পরিত্যাক্ত বাড়ীসহ আম বাগানে কি করছিল? সে তো আগেই স্থানীয় নয়ন নামের এক যুবকের কাছে তার ভিটার সমস্থ্য আম বিক্রি করে দিয়েছিল। তাহলে কি জিয়ার সাথে তার গোপন আতাত ছিলো? সুত্রটি জানায়, ঘটনার দিন সন্ধায় চাঁদপুর মোড়স্থ্য ফারুকের বাড়ী সংলগ্ন আব্দুল হাইয়ের বাড়ীতে অবস্থান করছিল ঘাতক জিয়া। পরে ঘাতক জিয়া তার ভাইয়ের বাড়ী থেকে গোপনে এসে মেয়ের সামনে দরজা ভেঙ্গে ছবিরনকে তুলে নিয়ে পাশ্বর্তী বাগানে হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পরে ঘরে নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তার ভাই আব্দুল হাইয়ের সহযোগিতায় জিয়া পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘাতক জিয়া পালিয়ে যাওয়ার সময় তার মেয়ে লীনাকে শাসিয়ে ভয়ভূতি দেখিয়ে যায় যে, “তুই কোন কথা বললে তোর মায়ের মত পরিণতি হবে তোরও”, তুই তোর চাচা(হাই)এর কথা মত স্বাক্ষী দিবি, না হলে তোর লাশও কেউ খুজে পাবে না”। এমনটিই জানায় নিলা।
স্থানীয় কয়েজন জানান, ঘটনার দিন আব্দুল হাইয়ের পরনে ছিল লুঙ্গী উল্টা করে বাধা, হাতে ছিল লাঠি, তার শরীরের ছিল কাদা মাটি? ওইদিন তাকে অনেকেই সন্দেহ করেছিল।
সরেজমিন প্রতিবেদন করতে যেয়ে আরো লোমহর্ষক কাহিনী উঠে এসেছে। ছবিরন তার বসত বাড়ী খুনের ৬ মাস আগে আব্দুল হাইকে কেন জমি রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছিল? মূলত ছবিরনের জমি দখল ও কামালের পরিবারকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করাটাই মূল কারণ ছিলো আব্দুল হাইয়ের।
তবে এলাকাবাসীর জোর দাবী আব্দুল হাই ও ঘাতক জিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই ছবিরন হত্যার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে। মুক্তি পাবে নিরাপরাধ মানুষ গুলো।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের মে মাসের ২৯ তারিখে কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর খালপাড়ায় রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ছবিরন খাতুন নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার শয়ন কক্ষের ডাবের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৫, তারিখ ১২/৬/১৭, কুমারখালী থানা।