মেহেরপুরের গাংনীতে জবাইকৃত গরুর পেটে বাচ্চা পাওয়া গেছে। রবিবার ভোরে গাংনী কসাইখানায় গাভী গরু জবাই করা হলে পেটে বাচ্চার বিষয়টি ধরা পড়ে।
গাংনী কসাই খানা দেখভালের দায়িত্বে থাকা পৌরসভার প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম জানান, ইসলাম কসাইয়ের ছেলে রানা কসাই সহ তার সহযোগীরা গাভী গরু জবেহ করে। গরুর পেটে বাচ্চা রয়েছে এমন সন্দেহ হলে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাচ্চার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।
তিনি আরো জানান,বাচ্চাটি রেখে দেয়া হয়েছে। তবে জোর পূর্বক মাংশ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে রানা কসাই ও তার সহযোগীরা। প্রায় প্রতিদিন রুগ্ন পশু জবেহ করা হলেও প্রশাসনের সহযোগীতা না পাওয়ার কারনে একক ভাবে তার কিছু করার থাকেনা।
এদিকে ডাক্তারী পরীক্ষা নিরিক্ষা ছাড়াই চলছে রুগ্ন পশু জবেহর মহাৎসব। প্রায় প্রতিদিনই রুগ্ন পশু জবাই করা হলেও প্রানী সম্পদ বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন দর্শকের ভুমিকা পালন করে আসছে। বাচ্চা সহ গাভী জবেহর ঘটনায় অভিযুক্ত কসাই সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবি করেছে ভুক্তভুগী।
স্থানীয়রা বলেন,গাংনী কসাই খানায় প্রায় প্রতিটা সময় নানা ঘটনা ঘটে। কখনও মৃত পশু আবার কখনও পেটে বাচ্চা আবার কখনও রুগ্ন পশু জবেহ করা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারনে দর্শকের ভুমিকা পালন করে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কসাই জানান,সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাংশ বিক্রি হয়। একারনে আইনের তোয়াক্কা না করেই যে যার মত করে পশু জবেহ করে।
এছাড়া কসাইদের কাছে মাংস নিতে আসা অনেক ভুক্তভুগীকেই লাঞ্ছিত হতে হয়। এছাড়া মৃত পশু ও রুগ্ন পশু জবেহ করার কারনে গাংনী কসাই খানায় দিনদিন ক্রেতা কমে যাচ্ছে। গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান স্বপন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন,ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাংনী বাজার কমিটির এক সদস্য জানান,গাংনী কসাইখানার মাংস নেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে অনেকেই। প্রশাসন ও বাজার কমিটির তদারকি না থাকার কারনে প্রতিনিয়ত ইচ্ছেমত পশু জবেহ করছে কসাইরা। এদিকে প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,পশু জবেহ ও মান নিয়ন্ত্রন আইন ২০১১ সালের বিধিতে বলা হয়েছে। পশু জবাই নিয়ন্ত্রণ ও জনসাধারণের জন্য মানসম্মত মাংস প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পশু জবাই ও জনসাধারণের জন্য মানসম্মত মাংস প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, জবাইখানার বাহিরে পশু জবাই নিষিদ্ধকরণ, জবাই খানার পরিবেশ, জবাইখানা, মাংস বিক্রয় স্থাপনা এবং মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন, ইত্যাদির জন্য লাইসেন্স, লাইসেন্সের মেয়াদ ও নবায়ন, জবাইখানা ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানার কর্মী ও মাংস বিক্রেতার স্বাস্থ্য’র বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া। এসব আইনের কোন তোয়াক্কাই করছেনা গাংনী কসাইরা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিন্সুপদ পাল বলেন,অভিযুক্ত কসাইদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।