কুষ্টিয়ায় যৌতুকের জন্য খোকসা সরকারি কলেজের সিনিয়র প্রভাষক চৌধুরী মিতা রফিককে পিটিয়ে মারাত্বকভাবে আহত করেছে তাঁর মাদকসেবী স্বামী সাবেক ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বিপ্লব।
সূত্রে জানা যায়, সাবেক ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বিপ্লব বেশ কিছুদিন ধরে তার স্ত্রী ও সন্তানের উপর নির্যাতন করে আসছিল। এরই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুর এলাকায় অবস্থিত মনামী এলিট পার্ক ৩/এ এর বাসায় আটকে রখে চৌধুরী মিতা রফিক ও একাদশ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে বেধড়ক মারপিট করে মদ্যপ বিপ্লব। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় ঐ শিক্ষক ও তার মেয়েকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে বলে জানা যায়।
নির্যাতিত চৌধুরী মিতা রফিক বলেন, ২২ বছর আগে কুষ্টিয়ার ইবি থানার হরিনারায়নপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে কামরুজ্জামান বিপ্লবের সাথে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অযুহাতে আমার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা যৌতুক নেয় বিপ্লব।সে আগে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীতে চাকরি করতো। কিন্তু সেখানেও প্রতারণা করার দায়ে তাকে চাকুরিচ্যুত করে। বর্তমানে সে বেকার।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, বিপ্লবের বর্তমান সংগী নারী আর মদ। সে সবসময় মদ্যপ অবস্থায় থাকে।বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে সময় না দিয়ে সে বাইরের নারীদের সাথে ঘুরে বেড়ায়। মদ খাওয়া আর নারী নিয়ে ফূর্তি করার জন্য তার রয়েছে একটা নির্দিষ্ট সিন্ডিকেট।এসব কিছু সহ্য করেও তিনি নির্যাতন বুকে চেপে নীরবে সংসার করে গেছেন। এমনকি এলিট পার্কের এই ফ্লাটটি কিনতে তার বাবা দিয়েছে ২৯ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন সময় আমার পরিবার কোটি টাকার উপরে যৌতুক দিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, তারপরেও যৌতুকলোভী বিপ্লব আমাকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। আমার বাবা একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ৫ বছর আগে মারা গেছেন। তারপরেও বিপ্লবের যৌতুকের চাহিদা মেটেনি।
এ ঘটনায় আক্রান্ত ঐ শিক্ষক কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কামরুজ্জামান বিপ্লবকে আটক করে পুলিশ।
খোকসা কলেজের বাংলা বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক চৌধুরী মিতা রফিক খোকসা থানাপাড়া গ্রামের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম পোকন ও স্কুলশিক্ষক হাসিনা রফিকের মেয়ে।
সাংস্কৃতিক ও সম্ভ্রান্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা মিতা রফিকের এমন নির্যাতনের খবরে যথারীতি নির্বাক তার সহকর্মীরা। তারা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।