দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাউকে কিছু না জানিয়েই মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রধান শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম। এমনকি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও।
জানা যায়, বিদ্যালয় থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর চাকুরী জীবন শেষ করে অবসরে যান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক। ঐ দিন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পান বিদ্যালয়েরই সহকারী প্রধান শিক্ষক সাঈদ আলী। বেশিদিন নিজের নামের আগে ভারপ্রাপ্ত রাখতে চাননি সাঈদ আলী। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলামকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে পরের দিন ২ জানুয়ারিই বিদ্যালয়ের অন্য কোন সদস্য কিংবা শিক্ষককে কিছু না জানিয়েই প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। যে পত্রিকাটি কুষ্টিয়াতেই পাওয়া যায় না। এরপর ১৫ জানুয়ারি গোপনীয়ভাবেই পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য প্রবেশপত্র পান এবং ২৫ জানুয়ারি পরিকল্পিতভাবেই নেওয়া হয় লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষা।
এদিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। ২৭ জানুয়ারি যথারীতি প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। তার নিয়োগের ব্যাপারে কোন কিছুই জানেন না বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি ফারুক হোসেন জানান, শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কোন আলোচনা বা মিটিংই বিদ্যালয়ে হয়নি। আমাকে একদিন বলেছিলো বিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী কমিটি করা হচ্ছে সেখানে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে স্বাক্ষর করতে হবে। আমি সেখানে স্বাক্ষর করি। এখন দেখছি সেটা মাদক বিরোধী কমিটির জন্য না সেটা নাকি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ব্যপারে ছিলো। আমি সই করার সময় সাদা কাগজ দেখে সই করতে চাইনি। মাদক বিরোধী কমিটির কথা বলে আমার সই নিয়েছে।
আরেকজন শিক্ষক প্রতিনিধি আসলাম হোসেন জানান, আমাকে সভাপতি বললো সই করতে, আমি কিছু না দেখেই সই করে ক্লাসে গিয়েছিলাম। এছাড়া আমি কিছু জানি না। আরেকজন শিক্ষক প্রতিনিধি নাসরিন সুলতানা জানান, আমাকে সভাপতি সাদা রেজুলেশন বইতে সই করতে বলেছিলো। কিন্তু আমি সেটা জানতে চাই কেন সাদা রেজুলেশনে সই করবো। সে জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে আমি সেখানে সই করিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জানান, নিয়োগের ব্যপারে আমি কিছুই জানিনা। সব সভাপতি জানে। সভাপতিই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো। আর আমি পরীক্ষার মাধ্যমে স্বচ্ছভাবেই নিয়োগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ সকল কাজ নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে। এখানে কোন দূর্নীতি আর অনিয়ম হয়নি। আর রেজুলেশন খাতা বিদ্যালয়ে নেই সেটা আমার কাছেই থাকে।
কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসার জায়েদুর রহমান জানান, বিষয়টি আমিও শুনেছি। এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।