কুষ্টিয়া জেনালের হাসপাতালে ডালিম হোসেন (৩৫) নামের এক ওয়ার্ডবয়কে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করে দালালরা।
বৃহত্তর কুষ্টিয়ার সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার প্রান কেন্দ্র কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। ১৯৬২ সালে কুষ্টিয়া শহরের প্রাণ কেন্দ্রে স্থাপিত হয়। ১০০ শয্যা নিয়ে চালু হয় ১৯৬৩ সালে। ২০০০ সালে ১৫০ শয্যায় এবং ২০০৭ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল এখানে প্রতিনিয়ত চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে প্রায় ২ হাজারেরও অধিক রোগী। কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য চরমে বহির্বিভাগের ৮ ও ৭ কক্ষ সহ অন্যান্য কক্ষে যে দেখা যায় সেখানে ভিতরে ও বাহিরে কিছু সংখ্যক নারী ও পুরুষ দালাল থাকে।
হাসপাতালে আসা রোগীদের নানান ভয় দেখিয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে দালালচক্র। হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, প্রতিদিন আশপাশের অন্তত ১০-১৫ টি ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রের, ১৫-২০ জন দালালকে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও অন্তর্বিভাগে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
এর মধ্যে নারী দালালের সংখ্যাই বেশি। এই নারীরা রোগী সেজে বহির্বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকে পড়েন। এরপর চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র লেখা শেষ করলেই রোগীর হাত থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে নেন তাঁরা। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের সেসব রোগনির্ণয় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে বহির্বিভাগের গাইনী ওয়ার্ডের অবস্থা একই রকম চিত্র দেখা গিয়েছে। দালালদের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। ডাক্তার রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষা লিখে দিলে দালালরা সেই ব্যবস্থাপত্রে নিয়ে রোগীদের হাসপাতালে পরীক্ষা না করিয়ে বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষা করায়।
রোগীরা অভিযোগ করেছে দালালের হাতে ব্যবস্থাপত্র যাওয়ার পরই আমাদেরকে ব্যবস্থাপত্র দিতে চায় না জোর করে বাইরের পতিষ্ঠান থেকে আমাদের পরীক্ষা করতে বাধ্য করে আমরা রাজি না হলে আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে দালালরা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন রুগীরা।
এদিকে গতকাল কুষ্টিয়া জেনালের হাসপাতালে ডালিম হোসেন (৩৫) নামের এক ওয়ার্ডবয়কে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারাত্বক ভাবে আহত করে দালালরা। আহত ওয়ার্ডবয় ডালিম হোসেন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ মাহফুজ (৩০) নামে এক দালালকে আটক করেছে।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে দালারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে রোগী, রোগীর স্বজনসহ হাসপাতালের কর্মচারী কর্মকর্তাবৃন্দ। গতকাল ডালিম হোসেন নামের ঐ ওয়ার্ডবয় দালালদের হাসপাতালে ঢুকতে নিষেধ করলে তার উপর দেশী অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা করে দালালরা।
এ বিষয়ে আটককৃত মাহফুজের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিলো। এদিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মোড়ে হাসপাতালকে কেন্দ্র করে দালালদের দৌরাত্ব দিন দিন বেড়েয় চলছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়কে প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে কোপানোর ঘটনাকে চরম উদ্ধত্বপূর্ণ বলে মনে করছে স্থাণীয়রা। তাই স্থাণীয় জনসাধারনের দাবী কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল দালাল মুক্ত করতে প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধি করা হোক।