কুষ্টিয়া ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: নাজিম উদ্দিনের রুমের সামনে মুহূর্তের মধ্যেই ভ্যানিটি ব্যাগের মধ্যে থাকা দুই হাজার টাকা উধাও। ব্যাগের চেইন খোলা। এমন অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে পড়েন সেই মহিলাটি।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ডলি আক্তার তার বোনকে নিয়ে চিকিৎসকের রুমের ঢোকার সময়ে এমনি এঘটনা ঘটে।
তিনি জানান, আমার ব্যাগের মধ্যে থেকে দুই হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। শিশু ও চোখের ডাক্তারের রুমের কাছে বেশি মানুষের জটলা ছিলো। কয়েকজন বলাবলি করেছিলো দুজনের মোবাইল ফোন চুরি হয়ে গেছে হাসপাতাল থেকে।
একজন মহিলা জানান, আমার মেয়েকে ডাক্তারের কাছে এনেছিলাম। টিকিট কাটার পর দেখি আমার সাইড ব্যাগের চেইন খোলা। বড় সাইড ব্যাগের মধ্যে ছোট আকৃতির ব্যাগে ৭শ টাকা রক্ষিত ছিলো। রোগী ও স্বজনদের নগদ অর্থ, মোবাইল সেট ও মূল্যবান জিনিসপত্র মুহূর্তের মধ্যে চুরি করে লাপাত্তা হচ্ছে চোরেরা।
জাহিদ নামের একজন জানান, চোরের উপদ্রবে আতঙ্কিত সকলেই। অবাঞ্ছিতদের প্রবেশে কড়াকড়ি, নিরাপত্তা প্রহরীদের নজরদারী বৃদ্ধি, বিনা প্রয়োজনে প্রবেশকারী সন্দেহজনকদের তল্লাশীর ব্যবস্থা করলে চোরের উপদ্রব কমবে।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণত্ব গরীব মানুষেরা আসে; তারা যদি চুরির মুখোমুখি হন, তাহলে নিঃস্ব হয়ে পড়েন অনেকেই।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের বহিঃবিভাগ, জরুরী বিভাগ, গাইনী বিভাগ, এক্স-রে ও প্যাথলজি বিভাগের সামনে এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও চুরির ঘটনা ঘটে। যেখানেই ভীড়, সেখানেই চোর।
এর আগে কতিপয় বোরখা পরিহিত অল্প ও মধ্য বয়সী মহিলা এ চুরির সাথে জড়িত ছিলো। তারা প্রতিদিনই হাসপাতালে ঢুকে বিভিন্ন জনাকীর্ণ স্থানে গিয়ে কৌশলে চুরি করে। এদের সাথে হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারীর যোগসাজসও রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
দায়িত্বশীল সূত্রটি জানায়, কখনো চোর ধরা পড়লে হাসপাতালের ওই সব কর্মচারীরাই এগিয়ে এসে শাস্তি দেবার অযুহাতে তাদের কৌশলে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
দালাল, ওষুধ চুরি ও চিকিৎসকদের সম্পর্কে মিডিয়াতে নিউজ হলেও সব সময়েই চোরেরা থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। কয়েকদিন অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে ধরে শাস্তি দিলেই চোর নির্মূল করা সম্ভব বলে মনে করেন সুত্রটি।
সোহানুর রহমান নামের একজন বলেন, অসহায় ও নিরুপায় মানুষগুলোই হাসপাতালে আসেন, তাদের অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে তারা কতটা নির্দয় হতে পারে। এই হাসপাতাল প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। এর মধ্যে চোর ধরার মতো পর্যাপ্ত সংখ্য প্রহরী না থাকলেও পোষাক পরা পুলিশরা যদি টহলে থাকে। তাহলে চোরেরা আতঙ্কিত বোধ করবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।