কুষ্টিয়ায় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ আরও আটজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে বৃহস্পতিবার (৪ জুন) চার জেলার মোট ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ৯২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার রিপোর্টে পূর্বের একজন এবং নতুন আটজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে কর্মরত পাঁচ পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
এর আগে ২৯ মে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাকিলাদহ পুলিশ ক্যাম্পের এক পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হলে ওই পুলিশ ক্যাম্প লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ নতুন করে আটজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন বলেন, কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত পাঁচ পুলিশ সদস্য বুধবার একযোগে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে এসে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে যান। আক্রান্ত ওই পাঁচ পুলিশ সদস্য বর্তমানে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অন্য দুই জেলা মেহেরপুর এবং চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে কেউ আক্রান্ত হননি।
কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের পাঁচ পুলিশ সদস্য ছাড়াও শহরের থানাপাড়া এলাকার এক যুবক (৩৫) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একজন ওটি এটেনডেন্ট (৩৪) এবং উপজেলার বারুইপাড়া ইউপির আমকাঠালিয়া গ্রামের ঢাকা ফেরত আরও একজনের (২৬) করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে কুষ্টিয়ায় ৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হলো।
করোনা স্যাম্পল টেস্টঃ আজ কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে মোট ১৮৮টি স্যাম্পল এর টেস্ট করা হয়েছে যার মধ্যে ৯২টি কুষ্টিয়া জেলার, ২৯টি মেহেরপুর জেলার, ৩৬টি চুয়াডাঙ্পা জেলার এবং ৩১টি বিনাইদহ জেলার।
এর মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার ৮ জন নতুন এবং ১ জন ফলোআপ রোগীর স্যাম্পলের ফলাফল পজিটিভ হয়েছে এবং বাকী সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ।
আজ পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার মোট ২৩০৫ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, এর মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ২১৩৬ জনের। ২০৩৭ জনের রেজাল্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়ার মোট করোনা পজিটিভ রোগী ১০০ জন (৯৯ জনের টেস্ট কুষ্টিয়ায় করা হয়েছে এবং ১ জনের টেস্ট ঢাকায় করা হয়েছে), যার মধ্যে মোট ২৯ জন সুস্থ হয়ে গেছেন। বাকী ৭১ জনের সবার বাসা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত সবাই সুস্থ আছেন। ১৬৯টি স্যাম্পলের টেস্ট রেজাল্ট এখনো পাওয়া যায়নি।
হোম কোয়ারেন্টাইনঃ নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কুষ্টিয়া জেলায় ০৪ জুন, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬৭৩ জনসহ ঢাকা/নারায়ণগঞ্জকরোনা আক্রান্ত এলাকা হতে ২৫৯২ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন এবং ৪ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলার ২টি প্রতিষ্ঠানে মোট ২০০ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের এবং ৬টি উপজেলাসহ ওটি প্রতিষ্ঠা (FWVTI তে ৪০টি, কুষ্টিয়া ডায়াবেটিস হাসপাতালে ৩০টি, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের ৩০টি) মোট ১৩৬টি আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে ৭১ জন আইসোলেশনে আছেন।
০৪ জুন ( বৃহস্পতিবার ) এর আপডেট
বহিরাগত বাদে জেলায় আদ্যাবধি কোভিড সনাক্ত ৯৮ জন। বহিরাগত সনাক্ত-২।
উপজেলা ভিত্তিক রোগী-
দৌলতপুর-২২, ভেড়ামারা-১৫, মিরপুর-১২, সদর-২৮, কুমারখালী-১৬, খোকসা-৫
(পুরুষ রোগী-৭৬, নারী রোগী-২২)
সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ২৯ জন।
উপজেলা ভিত্তিক সুস্থ- ২৭ জন
দৌলতপুর-১০, ভেড়ামারা-২, মিরপুর-৪, সদর-৪, কুমারখালী-৬, খোকসা-১, বহিরাগত সুস্থ-২
বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৬৮ জন
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩ জন।
আতংকিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন। ঘরের বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। অতি-প্রয়োজনীয় না হলে বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলুন। বার বার সাবান দিয়ে হাত ধৌত করুন। যত্রতত্র কফ, থুতু ফেলবেন না। হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় টিস্যু পেপার, রুমাল, বাহুর ভাঁজ ব্যাবহার করুন ও ব্যাবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলুন। একে অপরের থেকে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। সতর্ক থাকুন, সাবধানে থাকুন।