কুষ্টিয়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। যেখানে গত এক মাসের বেশি সময়ে জেলায় কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয় মাত্র ২৩ জন, সেখানে পাঁচ দিনের ব্যবধানে রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে।
গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৬ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ৬৪ (বহিরাগত বাদে) জন আক্রান্ত হলো। পুরুষ রোগী ৪৯, নারী ১৫ জন।
আজ রবিবার (৩১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কুষ্টিয়া জেলা সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাব থেকে কুষ্টিয়ার ১০৭ টি নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া গেছে যার মধ্যে ৬ টি কোভিড পজেটিভ। নতুন আক্রান্ত ৬ জনের মধ্যে কুষ্টিয়া সদরের ২ জন (হরিপুর বয়স ৩৬ ও ইবি বয়স ৪২) ভেড়ামারার ষোলোদাগে ২ জন (বয়স যথাক্রমে ৬০ ও ৬৫) এবং কুমারখালীর ২ জন (জাহেদপুর বয়স ৪৬, শিলাইদহ বয়স ৪৫)। নতুন আক্রান্তের ৫ জন পুরুষ ও ১ জন নারী। তাঁদের শারীরিক অবস্থাও ভালো রয়েছে।
করোনা স্যাম্পল টেস্টঃ আজ কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে মোট ২১০টি স্যাম্পল এর টেন্ট করা হয়েছে যার মধ্যে ১০৭টি কুষ্টিয়া জেলার, ২৮টি মেহেরপুর জেলার এবং ৭৫টি চুয়াডাঙ্গা জেলার। এর মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার ৬টি, মেহেরপুর জেলার ১টি এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার ৬টি স্যাম্পলের ফলাফল পজিটিভ হয়েছে এবং বাকী সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ। আজ পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার মোট ১৯০৯ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, এর মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ১৭৫৫ জনের। ১৬৯০ জনের রেজাল্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়ার মোট করোনা পজিটিভ রোগী ৬৬ জন্ (৬৫ জনের টেস্ট কুষ্টিয়ায় করা হয়েছে এবং ১ জনের টেস্ট ঢাকায় করা হয়েছে), যার মধ্যে মোট ২৭ জন সুস্থ হয়ে গেছেন। বাকী ৩৯ জনের সবার বাসা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত সবাই সুস্থ আছেন। ১৫৪টি স্যাম্পলের টেস্ট রেজাল্ট এখনো পাওয়া যায়নি।
হোম কোয়ারেন্টাইনঃ নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কুষ্টিয়া জেলায় ৩১ মে, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬৭৩ জনসহ ঢাকা/নারায়ণগঞ্জকরোনা আক্রান্ত এলাকা হতে আগত ২৫৮৭ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন এবং ৪ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলার ২টি প্রতিষ্ঠানে মোট ২০০ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের এবং ৬টি উপজেলাসহ ৩টি প্রতিষ্ঠানে (FWVTI তে ৪০টি, কুষ্টিয়া ডায়াবেটিস হাসপাতালে ৩০টি, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের ৩০টি) মোট ১৩৬টি আইসোলেশন ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে ৩৯ জন আইসোলেশনে আছেন।
ঈদের পর করোনা পজিটিভ রোগী বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় চিকিৎসকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, ঈদে বাড়িতে আসা মানুষেরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এবং তাদের মাধ্যমে আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঈদের পর থেকে ব্যাপক হারে রোগী বাড়ছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনো জেলায় কেউ মারা যাননি।
৩১ মে ( রবিবার ) এর আপডেট
বহিরাগত বাদে জেলায় আদ্যাবধি কোভিড সনাক্ত ৬৪ জন। বহিরাগত সনাক্ত-২।
উপজেলা ভিত্তিক রোগী-
দৌলতপুর-১৯, ভেড়ামারা-৯, মিরপুর-১০, সদর-৯, কুমারখালী-১৩, খোকসা-৪
(পুরুষ রোগী-৪৯, নারী রোগী-১৫)
সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ২৭ জন।
উপজেলা ভিত্তিক সুস্থ- ২৫ জন
দৌলতপুর-৯, ভেড়ামারা-২, মিরপুর-৪, সদর-৩, কুমারখালী-৬, খোকসা-১, বহিরাগত সুস্থ-২
বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩৯ জন
জেলা স্বাস্থ্যবভিাগ জানায়, কুষ্টিয়ায় প্রথম করোনা শানক্ত হয় ২৩ র্মাচ। সেই থেকে অদ্যাবধি মোট ৬৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৭ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
অনুগ্রহ করে সকলে সতর্ক থাকুন, সাবধানে থাকুন। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলুন। অতি-প্রয়োজনীয় না হলে ঘর থেকে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন।