কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার লক্ষ্মীপুরে নিউ জনসভা ক্লিনিকে ডিএনসি করতে গিয়ে নাড়ী কেটে ফেলায় মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বৃহ¯প্রতিবার সকাল ১০টায় কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের জমির (৪০) এর স্ত্রী কাজলি খাতুন (৩৪) নামে এক গৃহবধু লক্ষ্মীপুর নিউ জনসেবা ক্লিনিকে ডিএনসি করতে আসে। ক্লিনিকের দুই নার্স ওই মহিলার ডিএনসি করতে গিয়ে নাড়ী কেটে ফেলেন।
উক্ত মহিলার প্রচন্ড যন্ত্রণা শুরু হলে গতকাল বিকালের দিকে পুনরায় তাকে ওই দুই নার্স অপারেশন করেন। অপারেশনের মুহুর্তেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কাজলী খাতুন মারা গেলে ক্লিনিক থেকে কুষ্টিয়া সদর হসপিটালে পাঠানোর কথা বলে তাদেরকে বের করে দেয়।
ওই মহিলার স্বামী জমির উদ্দিন জানান, গত বৃহ¯প্রতিবাব আমার স্ত্রী কাজলি গর্ভবতী কিনা জানার জন্য লক্ষিপুর নিউ জনসেবা ক্লিনিকে নিয়ে আসি। এখানে আমার স্ত্রীকে পরীক্ষা করে জানতে পারি সে ৩ মাসের গর্ভবর্তী। এ সময় নার্স সুমিসহ অপর নার্স আমার স্ত্রীকে ডিএনসি করে। এরপর স্ত্রী কাজলিকে নিয়ে বাড়িতে যায়। বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী কাজলির অসহ্য যন্ত্রনা শুরু হয়। স্ত্রীর যন্ত্রনা দেখে পরের দিনে (শুক্রবার) বিকেল ৫টায় পুনরায় স্ত্রীকে ক্লিনিকে নিয়ে আসলে তারা আবারও আমার স্ত্রীকে ডিএনসি করতে চাইলে আমরা রাজি না হলেও জোরপূর্বক নার্স সুমি ও অপর নার্স আমার স্ত্রী কাজলিকে পুনরায় ডিএনসি করে। এ সময় অতিরিক্ত রক্তকরণে কাজলি মৃত্যু কোলে ঢুলে পড়ে এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তড়িঘরি করে প্রাইভেট গাড়ী এনে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। পরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসা জানায় আমার স্ত্রী মারা গেছে। ওরা আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। আমি ওদের কঠিন শাস্তি চায়।
এদিকে জানা যায়, আনুমানিক গত ১৪ দিন আগে কুমারখালী উপজেলার ধলনগর গ্রামের কসাইপাড়া এলাকার এক গৃহবধু এই ক্লিনিকে নরমাল ডেলিভারী করতে এসে তিনি মারা যান।
এলাকাবাসী জানায়, মাঝে মাঝে এই ক্লিনিকে অহরহ রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
আরও জানা যায়, এই ক্লিনিকের রেজিস্ট্রেশন নবায়ন হয়নি। সন্তোষ নামের এক কথিত প্যাথলজিশিয়ান ও একজন মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ডাক্তার দ্বারা চলছে এই ক্লিনিক। তারা অহরহ বিভিন্ন অপারেশন করে আসছে। এই ক্লিনিকে অপারেশনের জন্য আধুনিক কোন যন্ত্রপাতি নাই এবং কোন অভিজ্ঞ ডাক্তার ও নার্স নেই বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দালাল ও গ্রাম্য কোয়ার্ক ডাক্তাররা কমিশনের বিনিময়ে গ্রামের সহজ সরল অসহায় দারিদ্র রোগীদের কম খরচে চিসিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে এই ক্লিনিকে পাঠায়। এই ক্লিনিকের কথিত নার্স সুমি ও কথিত প্যাথলজিশিয়ান সন্তোষকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেরিয়ে আসবে মৃত্যুর আসল রহস্য। এলাকাবাসী এই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মেডিকেল আবাসিক অফিসার ডাক্তার তাপস কুমার সরকারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, যদি কোন ডাক্তার বাদে কোন নার্স ডিএনসি করলে এটা অপরাধযোগ্য।
এদিকে ক্লিনিকের মালিক হাফিজুর রহমান বুলুর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, আমি আটরশিতে গিয়েছিলাম। সেখানে অসুস্থ্য হয়ে মেডিকেলে ভর্তি আছি।