কুষ্টিয়া সদরের সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ ঘুষের টাকাসহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর হাতে আটকের খবরে তার নিজ উপজেলা মণিরামপুরে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বেরিয়ে আসছে মণিরামপুর পৌর এলাকায় ৫ তলা আলিশান বাড়ি নির্মাণ এবং শ্বশুরবাড়ী ফরিদপুরসহ নিজ এলাকায় প্রায় শতবিঘা জমি নামে-বেনামে ক্রয়সহ চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।
রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপট ও জনপ্রতিনিধি পিতার ক্ষমতাসহ অজ্ঞাত নানা কারণে তার বিরুদ্ধে এতদিন মুখ খুলতে সাহস পায়নি কেউ।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত সিংহের পিতা দুর্গাপদ সিংহ নিজের পৈতৃক জমি হিসেবে ৪/৫ বিঘার মত রেখে গেছেন। সুব্রত সিংহ চাকুরিতে প্রবেশের পর-পর বছর তিনেক আগে নিজ এলাকায় তরিকুল ইসলাম, দাউদ হোসেন, শামছুদ্দীন ও ছমিরসহ একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে জমি ক্রয় করেছেন।
এছাড়া একাধিক সূত্র জানায়, সুব্রত সিংহ শ্বশুর বাড়ি ফরিদপুর এলাকায় তার শাশুড়ীর নামে প্রায় ১৫ বিঘা জমি কিনেছেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে অঢেল সম্পত্তি গড়েছেন বলে সূত্রটি জানায়। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকে তার অঢেল অর্থ রয়েছে বলে স্থানীয়দের মাঝে প্রচার পাচেছ।
জমি কিনে ৫ তলা আলিশান বাড়ি নির্মাণের সত্যতা জানতে গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে যাওয়া হয় মণিরামপুর পৌর এলাকার ভগবান পাড়ায়। সেখানের বাসিন্দারা এই প্রতিবেদকে জানান, দৃষ্টিনন্দন ও বিলাসবহুল বাড়িটি নির্মাণ করছেন সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত সিংহ। বাড়ির প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
ওই আলিশান বাড়ি নির্মাণে দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন তার ভাই বাদল কুমার সিংহ। পিতা দুর্গাপদ সিংহ ছিলেন উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান। তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে কিছুদিন আগে পরলোকগমন করেন।
অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে নির্মাণ করা আলিশান বাড়ি এবং সম্পত্তির ব্যাপারে কেউ যেন মুখ খুলতে না পারে তার জন্য নিজ এলাকাসহ পৌর শহরে কিছু লোকজনকে ম্যানেজ করে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতেন তিনি। পিতা দুর্গাপদ সিংহ আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান থাকায় তার বিরুদ্ধে জোরালো কোন অভিযোগ করেননি স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর দাবি আটক সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত সিংহের অঢেল অর্থ-সম্পত্তি এবং আলিশান বাড়ি নির্মাণের ব্যাপারে যদি দুদক কর্মকর্তারা মণিরামপুরে এসে তদন্ত করেন তাহলে এর সত্যতা পাওয়ার পাশাপাশি তার ভাই বাদল সিংহসহ আরও অনেকের মুখোশ খুলে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে বাদল সিংহের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।