কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক জনসচেতনতামূলক পথসভা ও লিফলেট ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর রেলগেট সংলগ্ন ট্রাফিক বক্স’র সামনে এই পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশ ট্রাফিক বিভাগ, রেলওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুর্ব বিভাগ, ডিএমপির সহযোগীতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সাফ, এ্যাশ ফ্রি খাজানগর (এএফকে), নিরাপদ সড়ক চাই, অধিকার, ইচ্ছে পুরণ,রাকসা ও ¯^প্ন প্রয়াস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সাফের নির্বাহী পরিচালক মীর আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেলওয়ের কুষ্টিয়া সার্কেল (এএসপি) ফিরোজ আহমেদ। এসময় তিনি বলেন, আমরা অনেক সময় প্রত্যক্ষ করি যে ট্রাফিক আইন না মেনে জনগন চলাচল করে থাকে। ট্রেন আসার সময় রেলগেটে গেটপড়া অবস্থায়ও তারা চলাচল করে। সম্প্রতি পোড়াদহে এমন একটি ঘটনায় দুই যুবক ট্রেনে কেটে মৃত্যুবরণও আমাদের সকলকে ভাবিয়ে তোলে। তাই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। এছাড়াও ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করছে শিশুরা। তাদেরকে এমন কাজ না করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান এই রেলওয়ের উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: মুরাদ হোসেন, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, এ্যাশ ফ্রি খাজানগর (এএফকে)’র প্রধান নির্বাহী আসাদুল্লাহ আহমেদ (টুলু ফকির), জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন মাষ্টার, সিনিয়র সহসভাপতি নওশের আলী বিশ্বাস, ইচ্ছে পুরণের প্রধান উপদেষ্টা নূরজাহান বীণা, কুষ্টিয়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শাহানাজ সুলতানা বণি, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুকুল খসরু, জেলা মাদক প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি হাসিবুর রহমান রিজু, কাজী আরেফ আহমেদ স্মৃতি সংসদের সাধারন সম্পাদক কারশেদ আলম,¯^প্নপ্রয়াসের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মেহরাব হাসান মুশফিক, দিশার প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ্যাড. কামরুন্নাহার ময়না, তারুণ্য ৭১ এর সাধারন সম্পাদক সাদাত হাসান জেসান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের স্বজন শরীয়তুল্লাহ প্রমুখ।
পথসভায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের স্বজন শরীয়তুল্লাহ বলেন, আমাদের সকলকেই জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। কারন দুর্ঘটনায় আমি আমার ভাগ্নেকে হারিয়েছি। এমন করে যেন আর কারো স্বজনকে হারাতে না হয় সেজন্য পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার অনুরোধ অপ্রাপ্ত বয়স্কদের হাতে যেন মোটরসাইকেল না দেওয়া হয়।
পথসভায় বক্তারা বলেন, দুর্ঘটনা কোনো এক পার্শের দ্বারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এমনটি নয়। এরজন্য প্রয়োজন সমস্যার মূলে সবাইকেই সচেতনভাবে কাজ করতে হবে। তার মধ্যে দুর্ঘটনায় দায়ী ড্রাইভাররা যেন সহজেই ছাড়া পেয়ে যেতে না পারে, এর জন্য প্রচলিত আইনের উন্নয়ন দরকার। সেই সাথে পথচারীদের সচেতন হতে হবে।
রাস্তার ত্রুটি দূর করে ট্রাফিক আইন মেনে রাস্তায় পথচারী চলাচল, রাস্তায় সঠিকভাবে গাড়ি চালানো, সেইসঙ্গে চলাচলকারী যাত্রীদেরও সচেতনভাবে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে হবে, ড্রাইভারদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের নুন্যতম এসসসি পাশ হওয়া উচিৎ। এবং এই কুষ্টিয়াতে ব্যাপকভাবে ইজিবাইকের চলাচল করে থাকে। এর নিয়ন্ত্রণ আনতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি দিতে হবে।
এছাড়াও সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমুহকে নিয়ে সম্ভ্বেমিলিত ভাবে নিয়মিত চালক, শ্রমিকসহ জনগনকে নিয়ে জনসচেতনতামুলক কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলেই সর্বত্রে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হবে বলে মনে করেন বক্তারা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন স্মাইল ইন লাইফের প্রকল্প পরিচালক মো: বাপ্পী। এসময় বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যসহ শতশত জনগণএতে অংশ নেয়।