কুষ্টিয়ায় জন্ম নেওয়া জোড়া লাগানো যমজ দুই মেয়ে শিশু মারা গেছে। জন্মের মাত্র ৫ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে তাদের মৃত্যু হয়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে এই মেয়ে শিশু দুটির জন্ম হয়। জন্মের পর তাদের স্ক্যানো ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। জোড়া লাগানো শিশু দুটির শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঠিক থাকলেও দুজনের শরীরে একটি মাত্র হৃদপিন্ড ও একটি লিভার ছিল।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. তরুন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রায় এক মাস আগে জেলার কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আবু তালেবের গর্ভবতি স্ত্রী আরিফা খাতুন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আসেন আল্ট্রসনোগ্রাফি করতে। টেস্ট করার পর দেখা যায়, আরিফার পেটে জোড়া লাগানো যজম শিশু রয়েছে। পরে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায়, শিশু দুটির শরীরে একটি মাত্র হৃদপিন্ড ও লিভার রয়েছে।
তিনি জানান, এ ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরে তারা আরিফা খাতুনকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠান। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর একই ফলাফল আসে।
ডা. তরুন কান্তি ঘোষ বলেন, এ ধরণের জোড়া লাগানো শিশু খুব বিরল। লাখে একজন মা এমন শিশুর জন্ম দিয়ে থাকে। কুষ্টিয়াতে এ ধরনের অপারেশন এটাই প্রথম। তবে এ ধরনের শিশুরা সাধারণত বাঁচে না।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আইয়ুব আলী বলেন, শিশু দুটির বুক থেকে পেট পর্যন্ত জোড়া লাগানো ছিল। তাদের শরীরের সব অঙ্গ-প্রতঙ্গ আলাদা আলাদা হলেও হৃদপিন্ড ও লিভার একটি ছিল। এ কারণে তারা জন্মের পর ঠিকমত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছিল না। শিশু দুটিকে বাঁচানোর জন্য তারা অপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তবে দুপুরের পর পরই মারা যায় তারা।
তিনি জানান, তাদের ওজন অনেক কম ছিল। মাত্র ২ কোজি ৭০০ গ্রাম ওজন নিয়ে জন্ম নিয়েছিল তারা।
শিশুটির বাবা আবু তালেব জানান, তাদের একটি সন্তান আছে। তবে যমজ বাচ্চা হওয়ার খবরে তারা খুশি হয়েছিলেন। তবে জোড়া লাগা আছে শুনে তাদের চিন্তা হচ্ছিল। দুপুরের পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা গেছে। তাদের লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়েছে।