কুষ্টিয়া দৌলতপুর আল্লারদর্গা টেসল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের১০ম শ্রেণীর ছাত্র আবু বিন রশিদ হত্যার রহস্য উন্মোচন ও প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান নিহতের পিতা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে আবু বিন রশিদ TESL English Version School এ দশম শ্রেনীর ছাত্র। সে ওই স্কুলের হােস্টেলেই থাকে। সম্পূর্ণ স্কুল ও হােস্টেল সিসিটিভি দ্বারা কাভার করা। যেকোনাে কার্যকলাপ সিসিটিভি এর আওতায় ধরা পড়ে। গত ২৪ মে শুক্রবার ছেলেকে একটি মােবাইল কিনে দেই। হােস্টেলে মােবাইল ব্যবহার এর নিয়ম নেই। তাই তার মােবাইল কেনার ঠিক একদিনের মাথায় মানে শনিবার তার মােবাইল জব্দ করা হয়। শনিবার সেহেরির পর প্রধান শিক্ষক তার মােবাইল জব্দ করে। মােবাইল জব্দ হবার পর আমার ছেলে কিছুটা ভীত হয়ে পড়ে এবং নিজের রুমে ফিরে যায়। ২৫ মে শনিবার তার পরীক্ষা ছিল। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী সে ১১.৩০ এ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে হােস্টেলে যায়। জামা-কাপড় পাল্টে ১১.৫০ এর দিকে সে তার প্রধান শিক্ষক এর কাছে মােবাইলটা চাইতে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে ১১.৫০ এর পর থেকে আর কোনাে ফুটেজ নেই। এই ফুটেজ না থাকার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট জানতে চাইলে তারা বলে কারেন্ট ছিল না। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানা যায় বৈদ্যুতিক লাইন ঠিক করার জন্য তারা ২টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত লােডশেডিং দিয়েছিল। আমার কাছে স্কুল থেকে বিকেল ৩.২৮ একটা ফোন আসে এবং জানানাে হয় আপনার ছেলে গুরুত্বর অসুস্থ আপনি দ্রুত স্কুলে চলে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে আবার ফোন দিয়ে জানানাে হয় হাসপাতালে আসার জন্য। আমি এবং আামার পরিবার হাসপাতালে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। স্কুল কতৃপক্ষ জানান- আমার ছেলে গলায় দঁড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন পল্লী চিকিৎসক, সুইসাইডকৃত অনেক ভিকটিমকে দেখেছি, আমি আমার ছেলের লাশ দেখে তখনই বুঝেছি ২ থেকে ৩ ঘন্টা আগে মারা গিয়েছে। আমার ছেলের গলায় ফাসের দাগ যে জায়গায়, সে জায়গায় কোনাে সুইসাইডকৃত ব্যক্তির ফাঁসির দাগ থাকে না, শুধু মাত্র গলার বাম পাশে দাগ ছিলাে।’
তিনি বলেস, ‘আমার ছেলে আব্বা-আম্মা ডাকে অভ্যস্থ ছিল। অথচ তার সুইসাইড নোটে বাবা-মা লেখা ছিল, যা আমার কাছে অসঙ্গতিপূর্ণ। কেন তার ডায়রির পেজ ছেড়া ছিল! বিদ্যালয় ছাত্রাবাসের দুই ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজই বা গেল কই!’
নিহতের বড় বোন নাহিদা পারভীন নুপুর বিদ্যালয় কতৃপক্ষের অসঙ্গতি তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের ও প্রশাসনকে না জানিয়ে তারা লাশে হস্তক্ষেপ করেছে। আমার ভাইয়ের হাতের লেখার সাথে সুইসাইড নোটের লেখার কোন মিল নাই।’
নিহতের পিতা অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনার আলোকে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২৮মে মানববন্ধন করতে চাইলে, দৌলতপুর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম আমাকে ও আমার পরিবারকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত ও মানসিকভাবে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করেন। ওই দিন রাতেই ওসি নজরুল ইসলাম বদলি হয়ে যান।’