হরিারায়নপুরের শ্মশান ঘাটটি হুমকির মুখে
কুষ্টিয়া ইবি থানাধীন হরিনারায়নপুর কালি নদী থেকে মোয়াজ্জেম নামে এক ব্যক্তি অবৈধভাবে ছোট ড্রেজার দিযয়ে বালু উত্তোলন করছে। এতে হরিনারায়নপুর শস্মানঘাট পড়েছে হুমকির মুখে।
এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় অভিযোগ করে জানান, অত্র এলাকায় আমাদের মৃতদেহ সৎকারের একটি মাত্র স্থান এই শস্মানঘাট। এভাবে বালি উত্তোলন চলতে থাকলে আমাদের এই শস্মান ঘাটটি যেকোন সময় ধ্বসে পড়তে পারে।
তারা আরো জানান, শস্মান ঘাটের চারিপাশে ব্যক্তি জমিতে থেকেও অবৈধ ড্রেজার দিয়েও চলছে বালি উত্তোলন। এই কারণেই আমাদের শস্মান এলাকার জায়গা সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। আমরা এর প্রতিকার চেয়েও কোন ফল পাচ্ছিনা। এলাকার প্রভাবশালীরা জোর করে তাদের এই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছিনা।
অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে কালী নদী থেকে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন করছে কে এই মোয়াজ্জেময় খোজ নিয়ে জানা যায়, শৈলকূপা থানার শেখপাড়ার এক সময়ের চরমপন্থী গ্রুপের সদস্য ও দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্তের অভিযোগ রয়েছে। সাম্প্রতি শেখপাড়ার মাদক ব্যবসায়ী টুটুল পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পরেই এই মোয়াজ্জেম গা ঢাকা দিয়েছিল। সে স্থানীয় প্রভাবশালী ও প্রশাসন কে ম্যানেজ করে কালী নদীর বাড়াদি, করিমপুর, হরিনারায়নপুর শস্মানঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। এই বালু উত্তোলন করে সড়ক উন্নয়ন সহ অত্র এলাকার বিভিন্ন কাজে ৩০-৪০ ট্রাক বালি ১৫ শত- ২ হাজার টাকা ট্রাক প্রতি বিক্রি করে আসছে। এই অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে শস্মান ঘাট সংলগ্ন সড়ক গুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। লাশ নিয়ে শস্মান ঘাটে যেতে হিন্দু সম্প্রদায়দের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
এদিকে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়ের অনেকাংশ ইতিমধ্যে ধ্বসে গেছে। এ ব্যাপারে যদি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে এই শস্মানঘাটটি কালী নদীর মধ্যে বিলীন হয়ে যেতে পারে। নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক এক সনাতন ধর্মালম্বী জানান, আমাদের এই এলাকায় মৃতদেহ সৎকারের একটি স্থান হলেও এলাকার প্রভাবশালীরা এই স্থানটিকে অবৈধ বালু মহল বানিয়ে ফেলেছে। এতে আমাদের শস্মান দিন দিন ছোট হয়ে পড়েছে। নদীর পাড় ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ইতিমধ্যে শস্মান ঘাট ছোট হয়ে গেছে। এভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে এই শস্মান ঘাটটি নদীতে হারিয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা এসি ল্যান্ডের মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হরিনারায়নপুর এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।