কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্য সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় দুই জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি সোমবার দুপুরে শিমুলিয়া বিলজানি বাজারে ঘটেছে। আহতরা হলেন ওসমানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমানন ও বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের চাদর গ্রামের মৃত হুরমতের ছেলে মকসেদ (৩২)।
জানা যায়, সম্মেলনের প্রথম পর্ব শুরু হওয়ার পর স্বাগত বক্তব্য শেষ করেন খোকসা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবুল আক্তার। এরপর সঞ্চালনায় এসে শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম ছুটকা বলেন, সভাপতি আবুল আক্তার তার কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা নিয়েছেন নির্বাচনের কথা বলে। ঠিক তখনই মঞ্চ থেকে ছুটকার দিকে বাবুল আক্তার উঠে আসতেই বেঁধে যায় সংঘর্ষ। মঞ্চের নিচের নেতাকর্মীরা চেয়ার ছোড়াছুড়ি করতে থাকে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এক পর্যায়ে অতিথিরা দ্রুত গতিতে সম্মেলন ত্যাগ করে। প্রায় ২০ মিনিট পর পরিবেশ স্বাভাবিক হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া -০৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ এবিএম মেহেদী সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ ঘটনায় জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও ওসমানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আনিস, ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শিমুল, রফিকুল ইসলামসহ পাঁচজন আহত হন। কৃষক লীগ নেতাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার সময় সিনিয়র নেতারা আহত হন। ধস্তাধস্তির সময় জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার পোশাক ছিঁড়ে ফেলেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
আহত কৃষক লীগ নেতা আনিস বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রতিপক্ষ কুষ্টিয়া-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জের অনুসারীরা সভা চলাকালীন আমাদের ওপর হামলা চালান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলার সিনিয়র নেতারাও হামলার শিকার হয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তি আহত কৃষক লীগ নেতার পাশে দাঁড়িয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শিমুল বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা আমার ওপর হামলা করেছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার বলেন, অনুষ্ঠানের সঞ্চালক রফিকুল ইসলাম উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ বলেন, সম্মেলনের সময় একটু বিরোধ দেখা দিতেই পারে। তবে এটাকে নেগেটিভভাবে নেয়ার সুযোগ নেই।
আপনার ওপর হামলা হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সব নেতাকর্মীর কাছের মানুষ। আমার ওপর হামলা হয়নি। হামলাকারীদের ঠেকানোর জন্য চেষ্টা করেছি আমি।
খোকসা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে থানায় কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি।