কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তীতে পড়েছে হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসায় রেফার্ড করা রোগীরাসহ রিলিজ নেওয়া রোগী ও তার স্বজনেরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে অ্যাম্বুলেন্স চালক ও মালিকেরা ধর্মঘট করার ফলে এই দুর্ভোগে পড়ে তারা।
বুধবার সকাল থেকে বিকেলে পর্যন্ত হাসপাতাল চত্বরে সরেজমিনে বহিরাগত বা স্থানীয় কোন এ্যাম্বুলেন্স চোখে পড়েনি। দুপুর দুইটার দিকে ছাড়পত্র হাতে নিয়ে রোগীর স্বজন হাসপাতাল চত্বরে ছোটাছুটি করছে। তার নাম সুলতান মাহমুদ। তিনি কুমারখালী উপজেলার দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা। কথা হয় তার সাথে।
তিনি জানান, আমার কাকা বাড়ীতে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে এক সপ্তাহ আগে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ্য হওয়ায় চিকিৎসক রিলিজ (ছাড়পত্র) দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এ অবস্থায় তাকে এ্যাম্বুলেন্সে করে ছাড়া বাড়ী নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। কিন্তু এ্যাম্বুলেন্স চালকেরা ধর্মঘটের কারনে সেটি সম্ভব হচ্ছেনা।
তার মতো আরেকজন জাহিদ নামের এক যুবক জানান, তার দাদা ষ্ট্রোক করেছিলো কয়েকদিন আগে। সুস্থ্য হওয়ায় তাকে বাড়ী নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কোন এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাধ্য হয়ে ইজিবাইকে রোগী নিয়ে বাড়ী যেতে হচ্ছে।
হাসান নামের এক রোগীর স্বজন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য আসলে এখান থেকে রাজশাহীতে দ্রুত স্থানান্তরিত করতে বলে চিকিৎসক। কিন্তু এ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় যেতে পারছি না।
হাসপাতালের সামনে ঝালমুড়ি বিক্রিওয়ালা আমজাদ জানান, এখানে প্রতিদিনই বাইরে দাঁড় করানো থাকে অন্ত ২০-২৫টি এ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু আজ (বুধবার) সকাল থেকেই ফাঁকা দেখা যাচ্ছে। তাই রোগীর লোকজন রাজশাহী কিংবা ঢাকা যাবে অথচ এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে ছোটাছুটি করছে।
স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অভিযোগ, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে বেশ কিছু বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকে। এসব অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকাসহ রাজশাহীতে রোগী আনা-নেওয়া করা হয়। বেশ কিছু দিন ধরে হাসপাতালের সামনের দালালশ্রেণির কয়েকজন লোক অ্যাম্বুলেন্স চালকদের কাছে চাঁদা দাবি করে। না দেওয়ায় শামীম নামের এক চালকের সাথে বাগবিতন্ডা বাঁধে।এরই জের ধরে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এরআগে মঙ্গলবার সকালে বহিরাগত একটি মাইক্রোবাস হাসপাতালে রোগী নিতে আসলে তাকে জোরপুর্বক বাইরে বের করে দেয় স্থানীয় এ্যাম্বুলেন্স চালকেরা।এঘটনায় স্থানীয় কয়েকজন যুবক প্রতিবাদ করলে তাদের সাথেও স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সাথে তুমুল বাগবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ডকৃত রোগীদের থেকে রাজশাহী ও ঢাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া প্রকত ৫-৬ হাজার টাকা হলেও এ্যাম্বুলেন্স যেতে চাইলেও এখানকার এ্যাম্বুলেন্স চালকদের সিন্ডিকেটের কারনে কখনো কখনো দ্বিগুন ভাড়া গুনতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভ‚ক্তেভোগীরা।