মিরপুর ফুটবল মাঠ তৈরীতে ক্ষেদের আলী ও ফারুক চৌধুরীর অবদানের কথা
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ছবির এই খেলার মাঠটি বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘বি’ ক্যাটাগরীর সম্পত্তি। লীজ সুত্রে বর্তমান মালিক মিরপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
মাঠটিতে খেলাধুলার ফাঁকে ফাঁকে এ উপজেলার সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ,ধর্মীয় সভা,ঈদের নামাজ ও নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কারান্তরীন মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদি এই মাঠে জনসভা করেছেন।
ঐতিহাসিক এই মাঠটি কাদের অবদানে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তা অনেকেরই অজানা।
ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে জানা যায়, বর্তমান পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড সুলতানপুর মহল্লার রেলওয়ে কর্মচারী শেখ ক্ষেদের আলী (প্রয়াত) নামে প্রায় ৮ বিঘা রেলওয়ের এবড়ো-থেবড়ো (অসমতল) জমি লীজ নিয়ে তামাকের আবাদ করতেন। এক পর্যায়ে ওই জমিটি ক্ষেদের আলীর কাছ থেকে লীজ নিয়ে সুলতানপুরের সিরাজুল খান ইট ভাটা নির্মাণ করেন। এরই এক পর্যায়ে ১৯৭৮/৭৯ সালের দিকে পৌরসভার সাবেক মেয়র সাইফুল হক খাঁন ফারুক চৌধুরী তৎসময়ে তা্ঁর সমবয়সী খেলোয়াড়দের সাথে নিয়ে জায়গাটিতে খেলার মাঠ বানানোর উদ্যোগ নেন।
রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও শেখ ক্ষেদের আলীর সাথে ফারুক চৌধুরীর ছিল নানা-নাতীর সম্পর্ক।
সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে তিনি ক্ষেদের আলীকে প্রস্তাব দিয়ে মিরপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু সন্তোষ কুমার দে’র সাথে দেখা করান। সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেননি শেখ ক্ষেদের আলী।
কথিত আছে সে জন্য ক্ষেদের আলীকে জমির জন্য পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফাণ্ড থেকে ৩ হাজার টাকাও নাকি দেয়া হয়েছিল।
খেলার মাঠ তৈরীর জন্য জমির ব্যবস্থা হলো কিন্তু জমির প্রায় স্থানে পানি জমে থাকা অবস্থার কি হবে?
কয়েকদিনের মধ্যে তারা তৎকালীন সিও (ডেভ) এর সাথে মাঠ সমস্যা নিয়ে দেখা করে রিলিফের গম বরাদ্দের প্রস্তাব রাখেন। তখন তিনি তাদের প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে শুনে তাদেরক সিও (ডেভ) বলেন, জায়গাটি কোন প্রতিষ্ঠানের নামে থাকতে হবে।
সেই মোতাবেক রেলওয়ে থেকে তৎকালীন মিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান মিরপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে এককালীন ৯৯ বছরের লীজ করে আনতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন।
এছাড়াও মাঠটি তৈরীর পিছনে সৈয়দ নিজাম উদ্দিন লাইট (প্রয়াত), নজরুল করীম, প্রয়াত শফিউল আলম শফি ও চিত্তরঞ্জন পণ্ডিতের অবদান রয়েছে।
লীজ সম্পন্ন হলে সিও (ডেভ) জমিটিকে খেলার মাঠে রুপান্তর ঘটাতে ৫০ টন গম বরাদ্দ করেন বলে জানা যায়।