কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ময়না খাতুন (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে চুল কেটে গাছের সাথে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত ওই নারীকে ভেড়ামারা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।
গহবধূ উপজেলার গোলাপনগর এলাকার আসলাম হোসেনের স্ত্রী। আহত নারী ঠিকমত নড়াচড়া করতে পারছেন না। এ ঘটনায় ভেড়ামারা থানায় নারীর স্বামী বাদী হয়ে ৬জনকে আসামী করে মামলা করছেন। গত ২৪ মার্চ এ ঘটনা ঘটলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কাউকে জানাতে পারেনি ভুক্তভুগি নারী ও তার স্বামী।
মহিলা ওয়ার্ডে দাঁড়িয়ে নারীর স্বামী আসলাম হোসেন বলেন, দেড় মাস আগে ময়নার সাথে তার বিয়ে হয়। ময়নার এর আগে একাধিকবার বিয়ে হয়েছিল। আমিও আগে একটি বিয়ে করেছিলাম। গত ২৪ আগষ্ট গোলাপনগর গ্রামে নিজ বাড়িতে বসে গল্প করছিলাম। এ সময় আমার প্রথম স্ত্রী ও তার ভাইয়েরা ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। আমাকে বাইরে নিয়ে এসে বেদম মারপিট করে। আর ময়নার চুল কেটে দিয়ে, টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে এসে শরীরের জামা-কাপড় খুলে নেয়। এ সময় তাকে ওই অবস্থায় গাছের সাথে বেঁধে ৫ থেকে ৬জন মিলে নির্যাতন করে। কিল, ঘুষি ও লাথি মারায় তার সারা দেহ ফুলে যায়। ব্যাথায় সে নড়তে পারছে না। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নিয়ে এসে ময়নাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন আছেন। তার মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে। আসলাম জানায়, ময়নাকে বিয়ে করার কারনেই তাদের দুইজনকে মারপিট করা হয়েছে। আমার স্ত্রীর চুল কেটে দেয়া হয়েছে। এ ধরনের নির্যাতনের বিচার চাই আমরা।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মিজানুর রহমান জানান, আহত অবস্থায় ময়না গত ২৪ তারিখ ভর্তি হয়। তার চুল কেটে দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাকে মারপিট করা হয়েছে। ব্যাথায় সে ঠিকমত নড়াচড়া করতে পারছে না। সুস্থ হতে আরো কয়েকদিন ভর্তি থাকা লাগবে। আহত নারী ময়না জানান, ৫/৬জন মিলে আমাকে মারপিট করেছে। আমার অবস্থা খুব খারাপ। চুল কেটে দিয়েছে। মামলা হলেও পুলিশ আসামীদের ধরছে না। আমি এর কঠোর বিচার চাই। ময়না খাতুনের বোনের মেয়ে জানান, আমার খালার ওপর অমানুষিক নির্যাতন হয়েছে। আমরা এর কঠোর বিচার চাই। এ সভ্য যুগে একজন নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে তার মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার কঠোর বিচার চাই আমরা।’
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম খন্দকার জানান,‘ ময়না নামের এক নারীকে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৬জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’