নিয়মবহির্ভৃতভাবে স্ত্রীকে টিয়ার সদস্য না করায় প্রধান শিক্ষককে হুমকী ও অফিস সহকারীকে মারপিট করল এক আ’লীগ নেতা ও খন্ডকালীন শিক্ষক
নিয়মবহিরর্ভৃত ভাবে স্ত্রীকে টিয়ার সদস্য না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে প্রকাশ্যে হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকী দিয়েছেন স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা। এ ছাড়াও এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীকে মারপিট করে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে কুষ্টিয়া পিয়ারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়য়ের খন্ডকালীন শিক্ষক শাখাওয়াত হোসেন পল্টু ও আব্দালপুর ইউনিয়ন এর ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে খন্ডকালীন শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পল্টু তার নিজের নিয়োগ পাকাপোক্ত করতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে আসছে। এরই মাঝে অনিয়মের মাধ্যমে স্ত্রীকে টিয়ার সদস্য অন্তরভূক্ত করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নানা ভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এক পর্যায়ে ব্যার্থ হয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে জোরপূর্বক সব কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয় সাখাওয়াত হোসেন পল্টু এমন অভিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন।
এছাড়া ঘটনার সময় প্রতিবাদ না করে উল্টো পল্টুর পক্ষ নিয়ে আব্দালপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধান শিক্ষকে নানাভাবে হুমকি দেয়। এরই এপর্যায়ে খন্ডকালীন শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পল্টু প্রকাশ্যে অফিস সহকারী হারুন অর রশিদকে মারপিট করে লাঞ্ছিত করে।
এ ব্যাপারে পেয়ার পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক জানান, গত ২৪শে সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত স্থানীয় পত্রিকা নির্বাচনী তফসিল ছাপানো হয়। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমাদান ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর সকাল ১০ টা হতে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা দান করা যাবে। এরই মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হয়ে গেছে।
প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন,খন্ডকালীন শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পল্টু নিয়মবহির্ভূতভাবে আজি টিআর সদস্য তার স্ত্রী বিনা আক্তারকে পাকাপোক্ত করতে তাকে চাপ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে তাদের এই অযৌক্তিক দাবি মেনে না নেয়ায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন তাকে পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দেয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে খন্ডকালীন শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পল্টু অফিস সহকারী হারুন অর রশিদকে বেধড়ক মারপিট করে।
এ ছাড়াও ওই খন্ডকালীন শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পল্টু তার নিয়োগ পাকাপোক্ত করতে তার স্ত্রী রিমা আক্তারকে টিআর সদস্য করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তিনি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন।
অফিস সহকারী হারুন-অর-রশিদ জানান, সাখাওয়াত হোসেন পল্টু স্যার সাবেক সভাপতি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রওশন আলী বিশ্বাসের চাচাতো ভাই। রওশন আলী বিশ্বাস সভাপতি থাকালীন সময় সাখাওয়াত হোসেন পল্টুকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে সাবধান করার জন্য নির্দেশ দিয়ে যান। পল্টু স্যার প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কোন কারণ ছাড়াই আমাকে বেধড়ক মারপিট করে।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে খন্ডকালীন শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন পল্টুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অফিস সহকারি হারুন-অর-রশিদ আমাদের কথা শুনতে চাই না তাই তাকে শাসন করা হয়েছে। কাগজপত্র নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমি কিছুক্ষনের মধ্যেই সে কাগজপত্র আবার ফেরত দিয়ে যাই।
এদিকে এসব বিষয় নিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উনি একজন প্রধান শিক্ষক ওনাকে আমি কেন মারতে যাব? প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছেমত সদস্য করতে যাচ্ছিল আমরা শুধু সেটাই বাধা দিয়েছি।