কুষ্টিয়ায় টানা বর্ষণে সদ্য নির্মাণকাজ শেষ হওয়া কুষ্টিয়া মহাসড়ক সড়কের বেশ কিছু জায়গা খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কুষ্টিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে এই মহাসড়কের কাজটি শুরু হয়েছিলো। কিন্তু কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাফিলতিতে এই আন্দোলনের ফসল কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহ মহাসড়ক আবারো ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের এই ছবিটি কুষ্টিয়া মজমপুর এর মোজাফফর তৈল পাম্পের সামনে থেকে তোলা।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সাড়ে ১৯ কোটি ব্যয়ের সাড়ে ১৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজের প্রায় অর্ধেকটাই হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী। যেসব স্থানে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে সেই স্থানগুলোতে আবারও দেখা যাচ্ছে খানাখন্দ। ইতিপূর্বে এই মহাসড়কের ৮ বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা সংস্কার কাজে খরচ হয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত কাজ হিসেবে বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয় বলেও জানা যায়।
কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহ মহাসড়ক টি দিয়ে ৩২ টি জেলার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ১১ হাজার গাড়ি চলাচল করে বলে জানা যায়। একটি সূত্রে জানা যায়, এই সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য ফরিদপুর ইয়ার্ড থেকে বিটুমিন মিক্সার করে নিয়ে আসা হচ্ছে। ওই স্থানে একজন প্রকৌশলী তদারকি করার কথা থাকলেও সেটিও করা হচ্ছে না বলে জানা যায়।
অপর এক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর ইয়ার্ডে সড়ক ও জনপথের কোন তদারকি না থাকায় ইচ্ছে মতন বিটুমিন দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার মঈনুদ্দিন বাঁশি। আর এই নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে রাস্তা নিম্নমানের কাজের কারণে কাজ শেষ হতে না হতেই খানাখন্দে ভরে যাচ্ছে মহাসড়ক। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে চালক ও সাধারণ মানুষের।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারী ড্রাইভার কবির জানান, সড়কটি নির্মাণ হতে না হতেই এমন খানাখন্দের সৃষ্টি হলে হয়তোবা অল্পকিছুদিনের মধ্যেই সড়ক নির্মাণের পুরো টাকাটাই জলে যাবে। রাস্তা আবারো পূর্বের রূপ ধারণ করবে।
তিনি এই নির্বাহী প্রকৌশলীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলেন, দুর্নীতির কারণেই এই রাস্তার এমন খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। এই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত দাবি করেন।
একটি সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মঈনুদ্দিন বাঁশির সঙ্গে কুষ্টিয়া মহাসড়ক নির্মাণ এর কাজের গোপনে শেয়ার রয়েছে।
ইতিপূর্বেও এই নির্বাহী প্রকৌশলী ঝিনাইদা থাকা অবস্থায় বেশ কিছু অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে ফরিদপুর ইয়ার্ড থেকে নিম্নমানের বিটুমিন মিক্সার করে এনে কুষ্টিয়া মহাসড়ক এ ব্যবহার করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন,৬০/৭০গ্রেড ঠিক আছে।
এখানে থার্মোমিটার দিয়ে টেম্পারেচার দেখে ঐ বিটুমিন রাস্তায় ঢেলে মহাসড়ক নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এখানে কাজের কোনো গাফিলতি নেই। দাড়িয়ে থাকে কোন গাড়ির মবেল পড়ার কারণে হয়তোবা এই খানাখন্দের সৃষ্টি হতে পারে। এই মহাসড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে ২৫শে এপ্রিল ও শেষ হবে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে।