গত সপ্তাহে কুষ্টিয়ায় ভেড়ামারা ডাকবাংলো ও বাবর আলী সুপার মার্কেটের এক দোকান কর্মচারীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। হত্যার শিকার ওই তরুণের নাম অনিক(১৮)। এ ঘটনায় ৮ দিন অতিবাহিত হলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ।
এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানবন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। অনিকের পিতা আক্তার হোসেন ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ভেড়ামারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-০৪, তারিখ ২১-০৮-১৯ ইং। ধারা ৩২৩,৩২৪ ও ৩৪।
ভেড়ামারা থানা, এলাকাবাসী ডাকবাংলো ও বাবর আলী সুপার মার্কেটের প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যাকাণ্ডে আরিফ বস্ত্র বিতানের মালিক ও দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি কারিগর পাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুর রহমান আরিফ (৪২) ভেড়ামারার বিলশুকা সর্দ্দার পাড়া এলাকার শওকত হোসেন শংকরের ছেলে পলাশ (১৯) ও ভেড়ামারার ক্ষেমিরদিযাড় এলাকার মন্টু ব্যাপারীর ছেলে রবিন (১৮) সহ ৩-৪ জন জড়িত ছিলো। তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে আবির হাসান অনিককে পিটিয়ে হত্যা করে।
কিন্তু এ ঘটনায় ৮ দিন অতিবাহিত হলেও হত্যাকারীদের পুলিশ আটক করতে পারেনি। এ ঘটনায় ভেড়ামারা থানা পুলিশের ভূমিকা রহস্য জনক বলে স্থানীয়রা উল্লেখ করছে। এলাকাবাসী হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানবন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। নিহত আবির হাসান অনিক ভেড়ামারা উপজেলার কোদালিয়া পাড়া এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, আসামি আরিফুর রহমান আরিফ, পলাশ ও রবিন ভারতে পালানোর পাঁয়তারা করছে। অবিলম্বে আসামিদের গ্রেফতার না করলে তারা ভারতে পালিয়ে যাবে বলে অনিকের পরিবারের ধারণা। ভেড়ামারার আরিফ বস্ত্র বিতানের মালিক ও দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি কারিগর পাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুর রহমান আরিফের বাড়ি ভারতের সীমান্ত এলাকায় হওযায় অনিকের পরিবার তার পালিয়ে যাওয়ার আশংকায় রয়েছে।
উল্লেখ্য, ভেড়ামারা ডাকবাংলো ও বাবর আলী সুপার মার্কেটের আরিফ বস্ত্র বিতানের মালিক আরিফের পোষ্য ক্যাডার ঐ দোকানে বসে সিঙ্গরা খাওয়ার পর পানি খেয়ে হাতধোয়া উচ্ছিষ্ট পানি পার্শ্ববর্তী আমীন গার্মেন্টেসের দরজার সামনে ফেলে। ঐ দোকানের কর্মচারি (সেলসম্যান) অনিক পানি ফেলার প্রতিবাদ করলে আরিফ ও তার ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র (বাটাম ও হাতুড়ি) দিয়ে অনিকের ওপর হামলা করে তাকে বেপরোয়া ভাবে মারপিট করে আহত করে। মারাত্মক আহতাবস্থায় অনিককে প্রথমে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ভেড়ামারা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা খবির জানান, অনিক হত্যাকারীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শীঘ্রই আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
নিহত আবির হাসান অনিকের পিতা আক্তার হোসেন বলেন, ‘গত ৮ দিনেও ভেড়ামারা থানা পুলিশ আমার ছেলের হত্যাকারীদের আটক করতে পারেনি। আমি একজন দিন মজুর হওয়ায় আমার ছেলের হত্যার বিচার পাবো না!’
ভেড়ামারা ডাকবাংলো ও বাবর আলী সুপার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল ইসলাম মিলন বলেন, নিহত আবির হাসান অনিকের হত্যাকারীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্ষন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।