জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষ সৃষ্ট বিভিন্ন শিল্প কারখানার দূষিত বর্জ্যের বলয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গড়াই নদী এখন হুমকির মুখে।
কুমারখালী উপজেলায় ৩,৪১,২৫৫ জন মানুষের বসবাস। প্রায় ২ শত বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে গড়াই নদীর বাঁকে কুমারখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রয়েছে ছোট-বড় মিলে ৫৭০২ টি বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে বড় আকারে শিল্পপ্রতিষ্ঠান ৫ টি, মাঝারি আকারে ৬০৭ টি, ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান ৬৬০ টি রয়েছে। তবে এখানে তাঁত শিল্পের আধিক্য থাকায় ডাইং শিল্পটির এখানে বেশ প্রসিদ্ধ।
ফলে সুতার রঙ ও কাপড়ের রং পরিবর্তন বা ডাইং করার কাজে ব্যবহারিত সকল ব্যবহার্য ছোট-বড় মিলে ১৫টি ডাইং কারখানা গড়াই নদীর পাশ ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে। ঐ সকল ডায়িং কারখানার বর্জ্য গড়াই নদীতে অহরহ ফেলা হচ্ছে।
উপজেলার কারখানায় কোন শোধনাগার না থাকায় এ সকল বর্জ্য পদার্থ গড়াই নদীতে ফেলার কারণে মিঠা পানির মাছ হুমকির মুখে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে উত্তর পাড়ে নদীর কোন পানিপ্রবাহ না থাকায় মানুষ সৃষ্ট এসব বর্জ্য গড়াই নদীতে ফেলানোর কারণে নদীতে বসবাসকারী সকল মিঠা পানির মাছগুলো বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে।
গড়াই নদীকে ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে উপজেলার প্রায় ৫ শত মৎস্যজীবী জেলেরা। নদীতে সুপেয় পানি না থাকায় এবং শিল্পবর্জ্য ফেলানোর কারণে মিঠা পানিতে বসবাসকারী শতাধিক প্রজাতির মাছ এখন আর পাওয়া তেমনটা পাওয়া যাচ্ছে না। যেগুলো পাওয়া যায় তাও রোগাক্রান্ত ও আকারে ছোট। বিভিন্ন রোগ শোকে তাও শেষ হয়ে গেছে।
এই অবস্থায় অতিদ্রুত গড়াই নদীর পানি দূষণমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্থানীয়রা।