ভারতের প্রখ্যাত সুতা ব্যবসায়ী মোহিনী মোহন চক্রবর্তী (তৎকালীন নদীয়া) কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার এলাঙ্গীপাড়ায় ১৮৩৮ সালের ৫ জুলাই, ১২৪৫ বঙ্গাব্দে ২১ আষাঢ় এক ব্রাক্ষ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কৃষ্ণলাল চক্রবর্তী এবং মাতা ভগবতী দেবী। তার পিতা পুলিশ বিভাগে চাকরী করতেন এবং পিতামহ নব কিশোর চক্রবর্তী ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে প্রতিষ্ঠিত কুমারখালী সিল্ক ফ্যাক্টরির দেওয়ান ছিলেন।
মোহিনী মোহন চক্রবর্তী এন্ট্রান্স পাশ করে পরবর্তীতে তিনি ১৮৫২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ১৮৫৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ভারতের বর্ধমান জেলার দি বোয়ালিয়াহ্ সরকারি বিদ্যালয়ে সাড়ে চার বছর জ্যামিতি, বীজগণিত, পাটিগণিত, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং এখানে তিনি স্মরণযোগ্য ফল লাভ করেছিলেন। তার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৩/১৮৫৮ স্মারকে সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হুররো গোবিন্দ সেন স্বাক্ষরিত এক সনদপত্রে। তিনি যে পরিমাণ বিদ্যার্জন করেছিলেন, তা সে সমাজে ছিল অতি গ্রহণযোগ্য এ কথার সত্যতা মেলে। যাহোক, কর্মজীবনে তিনি নিজের অর্জিত জ্ঞান ও কর্মদক্ষতায় কালবিলম্ব না করে মাসিক ১৮ টাকা বেতনে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি নেন। অক্লান্ত কর্তব্যনিষ্ঠা, কর্মতৎপরতা এবং দায়িত্ববোধের গুণে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে উন্নিত হন। সে সময় একজন বাঙালির পক্ষে এতটা পদোন্নতি লাভ করা অসম্ভব ছিল।
তাঁর কর্মদক্ষতার প্রশংসা করেছিলেন কুষ্টিয়া মহকুমার প্রশাসক স্যার আলেকজান্ডার ম্যাকেঞ্জি এবং বাংলার সর্বময় কর্তা বঙ্গীয় লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার ডব্লিউ হান্টার। চাকরি ত্যাগ করে মোহিনী মোহন ১৯০৭ সালে ‘চক্রবর্তী এন্ড সন্স’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৮ সালে মিলপাড়া এলাকায় ১০০ একর জায়গার উপর নির্মাণ করেন মোহিনী মিল। মাত্র আটখানা তাঁত নিয়ে মিল শুরু হয়। পরবর্তীতে ইংল্যান্ড থেকে পিতলের হ্যান্ডলুম মেশিন আর পিতলের তৈরি প্রায় ২০০ তাঁত আমদানি করে বসিয়েছিলেন তার মিলে। এ সময় ভারতবর্ষের কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের আধুনিক সুতার কলের মধ্যে মোহিনী মিল ছিল অন্যতম। এখানে প্রায় ৩০০ শ্রমিক কাজ করতেন। এ মিলে উৎপাদিত সুতা ভারতবর্ষের সব প্রদেশ ছাড়াও বার্মা, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় যেত। সে সময় কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রকল মোহিনী মিল ছিল অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম কৃতিসন্তান, স্বদেশী আন্দোলনের নিরলস কর্মী এবং মোহিনী মিলের প্রতিষ্ঠাতা মোহিনী মোহন চক্রবর্তী বঙ্গদেশের বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন।
ব্রিটিশ আমলে তিনি দেশকে স্বয়ংসম্পন্ন করার জন্য যে উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তা পরবর্তীকালে একটি আদর্শ হিসেবে গৃহীত হয়। ১৮৫৭ সালে কুমারখালী প্রথম মহকুমা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। তখন বর্তমান রাজবাড়ী জেলার পাংশা ও বালিয়াকান্দি, কুষ্টিয়ার খোকসা, তদানীন্তন কুমারখালীর বর্তমানে বিলুপ্ত ভালুকা থানা কুমারখালী মহকুমার অন্তর্ভূক্ত ছিল। সে সময় এখানে একটি মুন্সেফ আদালত স্থাপন করা হয়, যে আদালতের প্রথম মুন্সেফ ছিলেন ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাসের সার্থক গ্রন্থকারিক সি আর দত্তের পিতা শ্রী ঈশান চন্দ্র দত্ত। ১৮৬১ সালে কুষ্টিয়া মহকুমা স্থাপিত হলে কুমারখালী মহকুমার অস্তিত্ব হরণ হয়। ১৮৬০ সালে খোদ কলকাতার সঙ্গে এখানকার রেলযোগাযোগ স্থাপন সামগ্রিক ব্যবসার গতিধারা আরো বেগবান করে দিয়েছিল।
তবে সবসময়ই কুষ্টিয়ার সাহিত্য-সংস্কৃতি, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক যে বিষয়ই বলি না কেন, যুগের ধারায় তা ছিল কুমারখালীর প্রভাবে আবৃত। ‘বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের’ জাতীয় সম্মেলনে কলকাতা থেকে আগত সিটি কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. শক্তি চট্টোপাধ্যায়, ড. আবুল আহসান চৌধুরীর ‘কুষ্টিয়ার ইতিহাস’ গ্রন্থে একটি সংযোজনীর অনুরোধ জানালেন। অধ্যাপক ড. শক্তি চট্টোপাধ্যায় সম্মেলনে বলেন, ‘দেশী পুঁজি বিনিয়োগে ভারতবর্ষে প্রথম শিল্পায়ন ঘটেছে কুষ্টিয়াতে। এর পূর্বে মুম্বাই করাচী বা কলকাতায় যে বড় বড় শিল্প বিনিয়োগ ঘটেছে সেটা একক ভাবে দেশী পুঁজি ছিল না, কিন্তু নিরঙ্কুশ দেশী পুঁজির বিনিয়োগে শিল্প বিকাশের সূচনা ঘটেছে কুষ্টিয়াতে (মোহিনী কটন মিল ১৯০৮ সাল)। সে সময় ভারতবর্ষের বাম আন্দোলন এখানে বিলেতী পণ্যের বিপরীতে স্বদেশী পুুঁজি এবং মালিকের বিপরীতে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষার এক উভয় সংকটে পরে।’ শ. ম. শওকত আলী ‘কুষ্টিয়ার ইতিহাস’ গ্রন্থে বলেছেন, উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের পর থেকে কুমারখালীতে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির যে বিকাশ ঘটেছিল, তা বাংলার আর কোনো মফস্বল শহরে হয়নি।
আবার কুমারখালীর রেশম ও নীল চাষের ইতিহাস খুবই পুরনো। এখানে সেই আদিকাল থেকে পতঙ্গ নামে এক রকম সুতা দিয়ে তসর কাপড় বোনা হতো। এখানে সাপ্তাহিক কাপড়ের হাট ছিল, যা এ বঙ্গে বেশ বড় ও প্রসিদ্ধ কাপড়ের হাট। এ কাপড়ের হাটে বেচাকেনা হতো লাখ লাখ টাকার সুতো, কাপড়, রঙ ও তাঁত সরঞ্জাম। ব্যবসা-বাণিজ্য ঘিরে এখানে গড়ে ওঠে বসতি এবং বণিক শ্রেণির মানুষের সমন্বয়ে এক সমাজ ব্যবস্থা তথা সভ্যতার প্রেক্ষিত স্তর। সমাবেশ হতে থাকে সাহা, কুন্ডু, বণিক শ্রেণির মানুষের এবং নীলকরদের সমাগম ঘটার সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে ব্যবসামনস্ক অন্যান্য শ্রেণির মানুষ।
১৯২১ সালে মোহিনী মোহন চক্রবর্তীর মৃত্যুর পর বড় ছেলে দেবী প্রসাদ চক্রবর্তী (কানু বাবু) মোহিনী মিলের দায়িত্ব পান। তিনি এ অঞ্চলে দুস্থ মানুষের কথা চিন্তা করে একটি আধুনিক হাসপাতাল, খেলার মাঠ, নাট্য মঞ্চ নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে মোহিনী মিলটি এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব খ্যাতি অর্জন করে। মোহিনী মিলের মোটা শাড়ি ও ধুতি বাংলার মানুষের প্রয়োজন লাগে। শেষদিকে এই মিলে আনুমানিক তিন হাজার শ্রমিক চাকরি করতেন। রাত দিন কুষ্টিয়া স্টেশনে ভারতের শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রেলগাড়ী যাওয়া আসা করতো মোহিনী মিলের সুতা নেয়ার জন্য। আবার বড়বাজার গড়াই নদীর ঘাট (পূর্ণ বাবুর ঘাট) থেকে বড় বড় নৌকায় সুতা যেত দেশের বিভিন্ন জায়গায়। পাবনা, শাহজাদপুর, গাজীপুর, নাটোরসহ দেশের প্রায় সব এলাকা থেকে তাঁতীরা এখানে আসতেন সুতা কিনতে। মোহিনী মিলের এ গোল্ডেন যুগ একটানা ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত চলে। ১৯৬৫ সালের শেষের দিকে মোহিনী মিলের মালিক মোহিনী মোহন চক্রবর্তীর ছেলে কানু বাবুর উপর নেমে আসে সাম্প্রদায়িক থাবা। রাতের আঁধারে মিলের ভেতর প্রবেশ করে লুটপাট চালিয়ে মালিক পক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় তারা। পরবর্তীতে কানু বাবুর মৃত্যুর পর কুষ্টিয়া মহাশ্মশানে তাকে সমাহিত করা হয়। মালিক বিহীন মিলটি পড়ে থাকে বেশ কয়েক বছর।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ২৭নং আদেশ বলে মিলটি জাতীয়করণ করে বাংলাদেশ বস্ত্র শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালনায় ন্যস্ত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি কিছুদিন চালু থাকার পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। অত্যধিক লোকসানজনিত কারণে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চালানোর অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ১৯৮১ সালের ১২ জুনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে মিলটি গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৮২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মিলটি বন্ধ করে দেয়া হয়। একই সঙ্গে মিলটির স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে দায়-দেনা মেটানোর জন্য একজন লিকুইডেটর নিয়োগ দেয়া হয়। মিলটির স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ দরদাতা নজরুল ইসলামের কাছে ১১ কোটি ২৬ লাখ টাকায় এক বিক্রয় চুক্তিমূলে ১৯৮৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর হস্তান্তর করা হয়। ১৯৮৬ সালের ২০ জানুয়ারি এক ত্রিপক্ষীয় চুক্তিমূলে গুটানো মোহিনী মিলের হস্তান্তরিত সম্পত্তির ক্রেতা নজরুল ইসলামের স্থলে মেসার্স শাহ মখদুম টেক্সটাইল মিলস্ লিমিটেডের নামে গ্রহণ করা হয় এবং ওই কোম্পানি নজরুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হয়। ক্রেতা কোম্পানি তাদের নিজস্ব সম্পত্তি বন্ধক রেখে এবং গুটানো মোহিনী মিলের সম্পত্তির উপর ২য় চার্জ সৃষ্টি করে অগ্রণী ব্যাংক কুষ্টিয়া বড়বাজার শাখা হতে প্রায় ৭ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে। কিন্তু মিলের পুরনো অংশটি পুনরায় চালু করার শর্ত জুড়ে দেয়ার কারণে কাঙ্খিত ও গুণগত উৎপাদন না হওয়ার ফলে মালিক পক্ষকে কোটি কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়। এ লোকসানের কারণে ১৯৮৮ সালের ২৫ মে মিলটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯১ সালের ২০ জানুয়ারি মিলটি বিক্রির জন্য আবারও দরপত্র ডাকা হয়। তখন অগ্রণী ব্যাংক ও নজরুল ইসলাম মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করলে বিক্রি কার্যক্রম স্থগিত হয়।
২০০৯ সালে শাহ্ মখদুম তৃতীয় আরেকটি পক্ষ দ্য পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস কর্পোরেশন (পিডিএসসি) লিমিটেডের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলটি চালুর চুক্তি করে। চুক্তিতে বলা হয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সরকার মোহিনী মিল বাবদ ক্রেতার (নজরুল) কাছ থেকে বিক্রীত মূল্য, সরকারের হাতে থাকার সময়ে নেয়া ঋণ ও অনুদানের সুদ আসলে (১৯৮৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত) মিলে ৪৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা পাবে। এর মধ্যে ৩০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা চুক্তি স্বাক্ষরের তিন মাস এবং বাকি ১৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা পরবর্তী এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর করা ওই চুক্তিতে বলা হয়, আগের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে সরকারের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারবে না। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে পাওনা পরিশোধ করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে মন্ত্রণালয় আবদুল মতিন নামের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আবার একই দামে বিক্রির চুক্তি করে। কিন্তু তখনো সঙ্গে ছিল পিডিএসসি। চুক্তি অনুযায়ী, সরকারকে এক কোটি ১০ লাখ এবং অগ্রণী ব্যাংককে ১১ কোটি টাকা পরিশোধ করে ২০১১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা মিলটি চালায়। এরপর বন্ধ হয়ে যাওয়া মিলটি বর্তমান ইনারগোটেক লিমিটেডের হাতে বন্দি। মিলের ৯৯ বিঘা সম্পত্তির মধ্যে কারখানা আছে প্রায় ২৮ বিঘা জমির উপর। কারখানার ভেতরের যন্ত্রাংশ পরিত্যক্ত। বিএমআরই ইউনিট এখন বন্ধ। ওই জমিতে চারটি মসজিদ, চারটি মন্দির, একটি স্কুল, একটি কলেজ, খেলার মাঠ, একটি দাতব্য হাসপাতাল রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, পুরো জায়গা কুষ্টিয়া পৌরসভার ভেতরে হওয়ায় এখানকার জমির কাঠাপ্রতি দাম বর্তমানে ১০ লাখ টাকার উপরে। সেই হিসাবে ৯৯ বিঘা জমির বাজারদর ১৯৮ কোটি টাকা। যোগাযোগ করা হলে বর্তমান ক্রেতা আরিফুর রহমান বলেন, ‘সমস্ত দায়-দেনা ও আইনগত বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মিলটি কিনেছি।’ মিলের জায়গায় কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএমআরই ইউনিটটি চালু করব। তারপর অন্য কোনো কারখানা স্থাপন করব।’ তবে বাজেয়াপ্ত এবং আবার চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করার পরও মিল হস্তান্তর করার আইনগত অধিকার আছে কিনা জানতে চাইলে শাহ্ মখদুম মিলস লিমিটেডের বর্তমান চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মুঠোফোনে বলেন, ‘ঋণের বোঝা থেকে নিজেদের মুক্ত করতেই মিলটি হস্তান্তর করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েই পুরো বিষয়টি করা হয়েছে।’
এদিকে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী মোহিনী মিল আবার হাত বদল হচ্ছে। মন্ত্রণালয় ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে মিলটি ইনারগোটেক কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে চিঠি দেয়। ইনারগোটেককে মিলের পুরনো যন্ত্রাংশ বিক্রি করার অনুমতিও দেয় মন্ত্রণালয়। বর্তমানে মিলটি পরিত্যক্ত, ধ্বংসপ্রাপ্ত, ভগ্নস্তুপে পরিণত হতে চলেছে। সামান্য কিছু নষ্ট মেশিন ও পরিত্যক্ত ঝুকিপূর্ণ ভবন ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার মোহিনী মোহনের মৃত্যু বার্ষিকীর স্মৃতি সভায় ১৯৪১ সালে বলেছিলেন, ‘যাহাদের অশান্ত দেশসেবায়, দূরদৃষ্টি ও চরিত্রের বলের ফলে দেশ এই মহাবল লাভ করিয়াছে তাহাদের মধ্যে মোহিনী মোহন চক্রবর্তী একজন শীর্ষস্থানীয়।’
ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন