কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজলাধীন ৩৮নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচিত ও অনুমোদিত কমিটি ভেঙে অবৈধভাবে মনগড়া কমিটি গঠনেরর পায়তারা করার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচিত কমিটির বিদ্যুৎসাহী সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ০৪/০৪/১৮ ইং তারিখে বেলা ১১:৩০ মিনিটে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মমতাজ পারভীন এর সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাপলা আক্তার জানান, সরকারি নীতিমালা অনুসরণপূর্বক বিদ্যালয়ের এসএমসি গঠনের জন্য ক্যাটাগরি ভিত্তিক সদস্য মনোনয়ন সম্পন্ন করেছেন। উপস্থিত সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসারদ্বয় কাগজপত্রাদি যাচাইপূর্বক ক্যাটাগরি ভিত্তিক ১০ জন সদস্যকে বৈধ বলে জানান।
প্রধান শিক্ষক জানান, নির্বাচিত নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে তিনজনসহ মোট পাঁচ জন উপস্থিত আছে এবং বাকি সদস্যদের উপস্থিতি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই বিস্তারিত আলোচনান্তে উপস্থিত সদস্য নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনপূর্বক উপজেলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনা এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে এই মর্মে সর্বসম্মতক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় , আসাদুজ্জামান এর প্রস্তাবে আনন্দ সরকারকে সভাপতি এবং শফিকুল ইসলাম এর প্রস্তাবে জাহানারাকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হোন। উপস্থিত বাকি সদস্যদের উক্ত প্রস্তাবের সর্বসম্মতিক্রমে হ্যাঁবোধক মন্তব্য পেশ করেন।
সভাপতি প্রধান শিক্ষক কে এস এম সি কমিটি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করেন এবং এতে সহকারি শিক্ষা অফিসার মমতাজ পারভীন ও খন্দকার শরিফুল ইসলাম, শিক্ষা অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুজ্জামান সাক্ষর করে উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান এর নিকট অনুমোদনের জন্য পাঠান। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান অনুমোদন না দিয়ে ভূয়া জমিদাতা হিসেবে জিয়াউল হককে সভাপতি করে কমিটি গঠন করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু এটা নিয়ম বহির্ভুত হওয়ায় শিক্ষা অফিসার ও সহকারি শিক্ষা অফিসার সাক্ষর করেননি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাপলা আক্তার বলেন, নিয়ম অনুসারে রেজুলেশনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে আনন্দ সরকারকে সভাপতি ও জাহানারাকে সহ-সভাপতি নির্বাচন করা হয়, কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান তা অনুমোদন দেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার খন্দকার শরিফুল আলম বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করা হয়ে। এতে প্রধান শিক্ষকসহ উপস্থিত সদস্য, সহকারি শিক্ষা অফিসার, শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাক্ষর করেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ও পছন্দের প্রার্থী না হওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান অনুমোদন দেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ জালাল উদ্দীন বলেন, আনন্দ সরকারকে সভাপতি ও জাহানারাকে সহ-সভাপতি করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা নিয়মানুযায়ী হয়েছে। এতে আমিসহ দুইজন এটিও, প্রধান শিক্ষিকা ও ইউএনও স্যারের সাক্ষর আছে। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান এর মনপুত না হওয়ায় তিনি অনুমোদন দেননি।
তিনি আরো বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান তার মতো করে অন্য একটি কমিটি দিয়েছে যা আমরা কেউ সাক্ষর করিনি। তিনি বলেন, অচিরেই এ বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহীনুজ্জামান বলেন, প্রথম কমিটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত হলে উপজেলা চেয়ারম্যান অনুমোদন না দিলেও একমাস পরে তা কার্যকর হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯১৫ সালে ভাঁড়রা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য জমি দেন স্বর্গীয় অমূল্য চন্দ্র বিশ্বাস। কিন্তু বর্তমানে জিয়াউল হক নামে একজন মুসলমান জমিদাতা হিসেবে দাবি করেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হককে সভাপতি করার নিমিত্তে পায়তারা করছেন।