ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নির্মাণাধীন দ্বিতীয় প্রশাসন ভবনের পাশে পাইলিংয়ের সময় মাথার আঘাত পেয়ে দুর্ঘটনাবশত এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) সাড়ে ছয়টায় ওই শ্রমিক নিহত হন। নিহত শ্রমিকের নাম মো. ওবাইদুল রহমান (৪০) ও পাবনা জেলার বাসিন্দা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম প্রশাসন ভবন লাগায়ো দ্বিতীয় প্রশাসন ভবনের পাইলিংয়ের সময় সন্ধা ছয়টায় ক্রেন ছিড়ে পড়ে। এসময় নিচে ১০ থেকে ১২ জন লোক ছিলেন। ক্রেনটি ওবাইদুল মাথার উপর পড়ে। গুরুতর আহত হলে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল নেওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। যাওয়ার পথে ক্যাম্পাস পাশ্ববর্তী বৃত্তিপাড়া এ্যাম্বুলেন্সে শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে।
কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানান, সন্ধায় খুবই গুরুতর অবস্থায় একটি নির্মাণ শ্রমিককে নিয়ে আসা হয়। তখন তার গুরুতর অবস্থান হওয়ায় কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা ও ইঞ্জেকশন দিয়ে কুষ্টিয়া রেফার্ড করা হয়। তবে কুষ্টিয়া মেডিকেলে যাওয়ার পথে বিত্তিপাড়া নামক স্থানে মৃত্যুবরণ করেছে বলে জেনেছি।
ওই ভবনের দায়িত্বশীল প্রকৌশল মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। বিষয়টি শুনেছি। সম্ভবত পাইলিংয়ের ওয়্যার ছিঁড়ে তার গায়ে পড়েছিল।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মুন্সী শহীদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, বিষয়টি মাত্র জানলাম। অনেক দুঃখজনক ঘটনা। সেখানে শতভাগ সেফটির ব্যবস্থা থাকার পরও কিভাবে কি হয়েছে তা আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।
এদিকে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় নির্মাণশ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় ঘটনাস্থলের পাশে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। তাঁরা নির্মাণকাজ চলা এলাকার টিনের বেড়া ভাঙচুর করেন। নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়াই চলমান কাজে শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতিকে দায়ী করেন তাঁরা।
প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ঘটনা শোনার পরপরই ওই শ্রমিককে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেছি। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। কীভাবে ঘটনাটি ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন নুন যায়েদ বলেন, লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সামান্য বিক্ষোভ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর আগে ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মনিরুল ইসলাম (২৬) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।