‘আমি তোমাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। মানুষ কতটা অমানবিক হতে পারে, তা জানা ছিলোনা। যে সন্তানরা আজ নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে সেই কোমলমতি শিশুদের নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে! ভাবতেও ঘৃণা হয়। চারদিকে নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে সুযোগসন্ধানীরা। আমি তোমাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত, আমি চিন্তিত চিন্তিত…….।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে কথাগুলো বলতে বলতে অঝরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। কাঁদলেন কাঁদালেন উপস্থিত সবাইকে। তাঁর কান্নায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিক ও নিসচার অন্যান্ন নেতৃবৃন্দও।
সোমবার রাজধানীর কাকরাইলে নিসচার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, অনুমোদিত আইনের নামই আপত্তিকর। তারা ‘সড়ক পরিবহন ও সড়ক নিরাপত্তা’ আইন দাবি করেছিলেন। কিন্তু শুধু ‘সড়ক পরিবহন আইন’ নামে এর অনুমোদন দেওয়া হলো।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় সর্বনিম্ন দশ বছরের কারাদণ্ড দাবি করা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনাও ছিল কমপক্ষে সাত বছর বা তার বেশি সাজার। তাদের দাবি ও আদালতের নির্দেশনা এড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
অনুমোদিত আইনে দুর্ঘটনার জন্য ‘দায়ী ব্যক্তি’র বদলে চালক শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দুর্ঘটনার জন্য মালিক, শ্রমিক, পথচারী যে কেউ দায়ী হতে পারে।
চালক ও হেলপারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তিনি বলেন, অনুমোদিত আইনে চালকদের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি ও হেলপারদের পঞ্চম শ্রেণি পাস করার কথা বলা হয়েছে। যারা হেলপার হিসেবে কাজ করে তাদের লক্ষ্য থাকে চালক হওয়া। তাহলে তারা পঞ্চম শ্রেণি পাস করে কীভাবে চালক হবে।
আইনে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি উহ্য রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, একটি কমিটি করা হবে যেখানে চালক, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি থাকবে। কিন্তু এই কমিটিতে নিরাপদ সড়ক নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরও রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এখন আমি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত। শুরু হয়েছে নোংরা রাজনীতি। চারদিকে নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে আছে সুযোগসন্ধানীরাও। ইতিমধ্যে যা শুরু হয়েছে, যেই করুক না কেন, তা অত্যন্ত জঘন্য ও ঘৃণিত। এটা মেনে নিতে পারছি না।